অনুসন্ধানী প্রতিবেদক, এটিভি সংবাদ
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দে পদ্মা নদীর তীরবর্তী উজানচর ইউনিয়নের চর কর্ণেশন ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বাহিরচর ছাত্তার মেম্বার পাড়া এলাকায় সরকারি খাস ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালি তুলে বিক্রি করছে প্রভাবশালী একটি চক্র।
ফসিল জমি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি মাটিভর্তি ভারী ট্রাক চলাচলে নষ্ট হচ্ছে মাঠের বহু ফসলের ক্ষেত ও আক্কাছ আলী হাইস্কুলের পাশ দিয়ে যাওয়া চরবাসীর যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি।
ইতিমধ্যে সড়কটির বিভিন্ন অংশে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন ঝুঁকিতে পড়েছে দুটি গ্রাম। এছাড়া প্রতিনিয়ত ট্রাক চলাচলের কারনে সৃষ্ট ধুলোবালিতে স্থানীয় বাড়ি ঘরের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কিন্তু মাটি-বালি কাটার চক্রটি অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় নদীপাড়ের বাসিন্দা ও কৃষকরা ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না।
অনূসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় এক মাস ধরে প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে রাতভর চর হতে ট্রাকে করে মাটি-বালি বিক্রির কার্যক্রম চলছে। এভাবে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক মাটি-বালুমাটি বিভিন্ন ইটভাটা, প্রতিষ্ঠান সহ মানুষের বাড়ি-ঘরে চড়া দামে বিক্রি করছে। এভাবে চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
মাটি কাটার সঙ্গে জড়িতদের দাবি প্রশাসনের অনুমোদন না থাকলেও সকলকে ম্যানেজ করেই তারা এ মাটি ও বালু উত্তোলন করছেন।
স্থানীয় এক কৃষক জানান, চরে ৩ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। তার ক্ষেতের পাশ দিয়ে ড্রেজারের পাইপ নিয়ে গেছে। মাঝেমধ্যে পাইপ ফেঁটে গিয়ে বালিযুক্ত পানি ক্ষেতের মধ্যে ভেসে যায়। এতে ক্ষেতের ক্ষতি হচ্ছে। তবে কিছু বলার উপায় নেই। জাহিদ বিশ্বাস, ইসমাইল সহ তিন ব্যাক্তি নদীর তীর ঘেঁষে তিনটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে অনুরুপভাবে বালি তুলছেন। উত্তোলিত বালু তিনি পাইপযোগে নিরাপদ স্থানে স্তুপ করে বিক্রি করছেন।
বালি উত্তোলনকারী জিলাল মোল্লা ও জাহিদ বিশ্বাস জানান, তাদের সাথে এলাকার আরো অনেকেই জড়িত। এতে প্রশাসনের কোন অনুমতি নেই। তারা দাবি করেন, এইসব জমি ব্যাক্তি মালিকানাধীন। তাদের টাকা দিয়েই বালি তোলা হচ্ছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, চর এলাকা হতে মাটি ও বালি উত্তোলনের বিষয়ে প্রশাসন কাউকে কোন অনুমতি দেয়নি। অনুমতি বিহীন কেউ এ কাজ করলে তা অবৈধ।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি মাটি বহনকারী দুটি ড্রাম ট্রাক গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ডের মহাসড়ক থেকে জব্দ করা হয়েছে এবং আক্কাস আলী হাই স্কুলের পেছন থেকে যে স্থান থেকে ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে কাউকে না পেয়ে ভেকুর ব্যাটারী জব্দ করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।