
আসিফ খন্দকার, এটিভি সংবাদ
পুরো নাম ইসরাত জাহান ইকরা।বাবার নাম ওছমান গণি তালুকদার, মায়ের নাম সাহিদা খাতুন।ইকরার বেড়ে উঠা টাংগাইলের ঘাটাইল উপজেলায়।ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে এখন পড়াশুনা করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে।
কিভাবে আবৃত্তি নিয়ে এগিয়ে চলা এই প্রশ্নের জবাবে ইকরা জানায়, “স্কুলের প্রতিযোগিতাগুলো থেকেই আবৃত্তি শুরু,আম্মুই দেখিয়ে দিতেন,একদম প্রথম দ্বিতীয় শ্রেণি থেকেই আবৃত্তি প্রতিযোগিতা গুলোতে সবাই বেশ প্রশংসা করতেন,শব্দকে অনুভব করতাম সেই ছোট থেকেই,এরপর উপজেলা,জেলা এবং জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি,প্রাপ্তিও ছিলো প্রচুর।শিক্ষকরা প্রচুর উৎসাহ দিয়েছেন।প্রতিযোগিতার বাইরে আবৃত্তি শুরু করি কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে,সঠিক মঞ্চটা পাই ঠিক তখন,প্রচুর প্রশংসা এবং ভালোবাসা পেয়েছি কলেজের সবার কাছে এই আবৃত্তির জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার পরপরই শুরু হয় করোনা।বন্দী জীবনে মুক্তির পথ খুঁজলাম শব্দের কাছে।ফেসবুক এবং ইউটিউবে গল্প এবং কবিতা পড়া শুরু করলাম।
২০২১ এর ১৫ ই আগস্ট আমার পড়া একটা গল্প(বুয়েট পড়ুয়া ভাইয়ের টিউশনির গল্প) প্রচুর মানুষ পছন্দ করা শুরু করেন,গল্পটা এখন পর্যন্ত প্রায় তিরিশ লক্ষ মানুষ শুনেছেন। এরপর সবাই আমাকে চিনতে শুরু করেন “Iqra – a storyteller” হিসেবে।একটা বাক্য যেটা অজস্র মানুষ আমায় লিখেছেন, “তোমাকেও কেউ ভালো না বেসে পারে?”, আসলে এটি আমার বলা একটা গল্পের লাইন,যেটি লিখেছেন আনুশা মেহরিন আপু, এই কাজটিও ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলো, এই গল্পটিও প্রায় বিশ লক্ষ মানুষ শুনেছেন।আমার পরবর্তী কাজগুলোও মানুষ সাদরে গ্রহণ করেছেন।
২১ নভেম্বর ২০২১ প্রথম আলো আমার এই জার্নিকে “স্বপ্ন নিয়ে” তে ফিচার করে যা নিঃসন্দেহে আমার জন্য একটা বড় প্রাপ্তি। “
আবৃত্তির পাশাপাশি ছবি আঁকা এবং রান্নাতেও বেশ পারদর্শী ইকরা।বন্ধুমহলে তার রান্না সমাদৃত। তার আঁকা ছবিও চমৎকার এবং অনেক মানুষের প্রিয়।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইকরা জানায়, “ছোটবেলা থেকে বই পড়তে ভীষণ ভালোবাসি,বইপোকা নামে স্কুল কলেজে কিংবা বন্ধুমহলে সবাই ডাকতো, ইংরেজি সাহিত্যে পড়শুনার সুযোগটা তাই বিরাট একটা আনন্দের ব্যাপার ছিলো, যদিও বাংলা সাহিত্যের সাথেই আমার বেড়ে উঠা।সাহিত্য পড়া দারুণ উপভোগ করছি,পড়াশুনা শেষে যদি আমার এই উপভোগ্য বিষয়গুলো পরবর্তী প্রজন্মের সাথে ভাগ করে নিতে পারি, বেশ হয়।আম্মু আব্বু দুজনেই শিক্ষক,তাই হয়তো এই পেশায় এতো টান। আম্মু আব্বুর ইচ্ছে অনুযায়ী বিসিএস দিয়ে সরকারি কর্মকর্তাও হতে ইচ্ছে করে মধ্যে। তবে একটা বিষয় সুনিশ্চিত, কবিতা এবং শব্দকে অনুভব করা শিখতে চাই আরও ভালোভাবে,যাতে সমস্ত বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে পৌছে যায় আমার উচ্চারণ।
লেখালেখি করি মাঝে মাঝে,ইচ্ছে আছে নিজের অনুভবগুলিকে নিয়ে সত্যি সত্যি একদিন বই লিখে ফেলবো।”
