এজলাস কক্ষে হট্টগোল : বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, এটিভি সংবাদ

সাম্প্রতিক তারেক রহমানের দেওয়া সব বক্তব্য অনলাইন থেকে সরানোর আদেশ দেওয়াকে কেন্দ্র করে এজলাস কক্ষে হট্টগোল ও ফাইল ছুঁড়ে মারা ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) আপিল বিভাগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি এ আবেদন করেন।

গত সোমবার (২৮ আগষ্ট) তারেকের সব বক্তব্য অনলাইন থেকে সরানোর আদেশ দেওয়াকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের মধ্যে এজলাস ছেড়ে যাওয়া দুইজন বিচারপতি সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর বিচারকাজ শুরু করেন। দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলম এজলাসে আসন গ্রহণ করে বিচার কাজ শুরু করেন।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আপনার বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির কাছে অনাস্থা জানিয়েছি। আপনি একজন পক্ষপাতদুষ্ট বিচারক। আপনার থেকে আমরা ন্যায় বিচার পাব না। এ কারণে আপনার কোর্টে তারেক রহমানের কোনো মামলা চলতে পারে না।

হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির আইনজীবীরা বলেন, একপক্ষের বক্তব্য না শুনেই ৩০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে আপনি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদেশ দিয়েছেন। এটা বিচার বিভাগের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। আপনি কোর্টটাকে নষ্ট করে দিলেন।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমাদের বক্তব্য আপনার শুনতে হবে। আমাদের বক্তব্য না নিয়ে কোনো অর্ডার পাস করতে পারেন না। আপনি কি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নীলনকশার রায় দিতে বিচারকের আসনে বসেছেন?

বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান বলেন, আপনাদের ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে শুনেছি। কোর্টে উপস্থিত থাকা ব্যারিস্টার কাজল সঙ্গে বিচারপতির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আপনি আমাকে শুনানি করতে দেননি। আপনি ৩০ সেকেন্ড সময় নিয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদেশ দিলেন। এটা আপনি করতে পারেন না। কোর্টের পরিবেশকে আপনি নষ্ট করে দিচ্ছেন। আমাদের আদেশের বিরুদ্ধে আপনারা আপিল বিভাগে যেতে পারেন। এ সময় বিএনপির আইনজীবীরা তাকে পক্ষপাতদুষ্ট বিচারক হিসেবে চিৎকার, চেঁচামেচি করতে থাকেন। একপর্যায়ে কোর্টে উপস্থিত থাকা আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা বিএনপির আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা আদালতকে এভাবে প্রেসার ক্রিয়েট করবেন না। এ কথা বলার সঙ্গে আওয়ামী ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও হইচই চলতে থাকে। কোর্টে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে বিচারপতিরা এজলাস ছেড়ে খাসকামরায় চলে যান। বিচারকাজ বন্ধ হয়ে যায় আদালতের।

তারও আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারেক রহমানের সাম্প্রতিক দেওয়া সব বক্তব্য অনলাইন থেকে সরানোর জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

আদেশের সময় আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, অ্যাডভোকেট নাসরিন সিদ্দিকা লিনা, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ওই সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল উপস্থিত ছিলেন।