
কক্সবাজার প্রতিনিধি
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলার রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও নন্দ দুলাল রক্ষিতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) র্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান লে.কর্নেল আশিক বিল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ৭ দিনের রিমান্ডে তাদের মেজর (অব.) সিনহা নিহতের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এরআগে, সোমবার (১৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কক্সবাজারের জলতরঙ্গ রিসোর্টে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, ওসি প্রদীপসহ তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খুব শিগগিরই র্যাব হেফাজতে নেওয়া হবে।
ওই ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনার মূল সাক্ষী শিপ্রা ও সিফাতের কম্পিউটার ডিভাইসসহ ২৯টি সামগ্রী কক্সবাজারের রামু থানায় পুলিশের হেফাজতে আছে। বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যম উক্ত সরঞ্জামাদি র্যাব হেফাজতে নেওয়া হবে। কারণ, মামলা তদন্তের স্বার্থে ওই কম্পিউটার ডিভাইসগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজ দেবে।’
ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে র্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের চার সদস্য ও সন্দেহভাজন তিন আসামিকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আমরা তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। দক্ষ ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে এই মামলা তদন্ত করছে র্যাব। তদন্ত শেষ হলে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এর আগে সোমবার বিকালে টেকনাফের শামলাপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ওসি প্রদীপ কুমার দাশ
এদিকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ ৩ আসামিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এছাড়া কমিটি রবিবার (১৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফের শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্প ইনচার্জের কার্যালয়ে তদন্ত কমিটি গণশুনানি করে। ওই শুনানিতে সাক্ষ্য দিতে ১১ জনের নাম নিবন্ধন করা হয়। নিবন্ধনকৃত এসব সাক্ষীর মধ্যে নয় জনের সাক্ষ্য নেয় তদন্ত কমিটি। গত ১২ আগস্ট তদন্ত কমিটির সদস্য কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাহজাহান আলী একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে কমিটি গণশুনানির আয়োজন করে। এ শুনানিতে অংশ নিতে স্থানীয়দের আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত। ওই ঘটনায় ওসি প্রদীপসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা এবং পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছে।