নড়াইল, এটিভি সংবাদ
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার দত্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) গোলক চন্দ্র বিশ্বাস ও সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন পিকুলের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা অনিয়মে অতিষ্ঠ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির একাংশ, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল হান্নান ও ওহিদুল মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, কোনো রসিদ প্রদান ছাড়াই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে কাউকে না জানিয়ে স্কুলের কম্পিউটার অপারেটর পদে এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অজানা কারণে স্কুলের পশ্চিমপাশের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার কাজ বন্ধ করে রেখেছেন তারা। বেআইনিভাবে স্কুলের জমি ইজারা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ।
তারা আরও অভিযোগ করেন, ম্যানেজিং কমেটির সদস্য হিসেবে প্রধান শিক্ষক গোলক চন্দ্র বিশ্বাসের নিকট স্কুল ফান্ডের অর্থের ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেছেন সভাপতি সব টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন।
সম্প্রতি স্কুলের ক্রিড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলেও পুরস্কার বিতরণ করা হয় নি। দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে দুজন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা জানান, বিগত দিনে এই স্কুলের লেখাপড়ার মান ভালো থাকলেও এই সভাপতি অর্থাৎ কমিটির আমলে লোখাপড়ার মান একেবারেই নিম্নমুখী রয়েছে। ম্যানেজিং কমিটি কোন মিটিং করে না। নিয়োগ বাণিজ্য শেষ করে এখন আর তিনি বিদ্যালয়ে ঠিকমত খোঁজখবর রাখেন না। আমাদের জোর দাবি স্কুলের লেখাপড়ার মান এবং পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক।
কালিয়া উপজেলার দত্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী পলি খানম শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রশিদ ছাড়াই প্রধান শিক্ষকের কথা মত অর্থ নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা এবং অন্যসব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে শিক্ষকদের অবসর ভাতার জন্য।
কালিয়া উপজেলার দত্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) গোলক চন্দ্র বিশ্বাস তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, খেলাধুলার পুরস্কার ওই সময় না দেওয়া হলেও আগামী ৭ মার্চ দেওয়া হবে। কম্পিউটার অপারেটর নিয়ম মেনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, শিক্ষকদের অবসর ভাতার জন্য এ টাকা নেওয়া হয়েছে, শুধু আমরা নয় সারাদেশে নেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ও বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন পিকুল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয় সরকারি নিয়ম নীতি মেনে পরিচালনা করা হয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।