সৈকত মনি, এটিভি সংবাদ
একটি হত্যা মামলায় পলাতক রয়েছেন জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও হদিস পাচ্ছিল না আওয়ামী লীগের সাবেক এই সংসদ সদস্যের। তবে সম্প্রতি তিনি ঢাকার আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন। পলাতক অবস্থায়ই পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য আঙুলের ছাপ ও আইরিশ ছবি দিয়েছেন।
এতে প্রশ্ন উঠছে, পাসপোর্ট অফিসের কর্মচারীরা তাকে শনাক্ত করতে পারলে পুলিশ কেন তাকে ধরতে পারছে না? এই বিষয়ে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী বলেছেন, তিনি একটি হত্যা মামলার পলাতক আসামি, এবং আমরা তাকে গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছি।
শিরীন শারমিনের বিরুদ্ধে রংপুরে মুসলিম উদ্দিন নামের এক স্বর্ণশ্রমিককে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। ১৯ জুলাই ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুরের সিটি বাজার এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে গুলি লেগে নিহত হন মুসলিম উদ্দিন। এর পর ২৭ আগস্ট তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়।
অন্যদিকে, শিরীন শারমিনের কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করা হয়েছে। তার নতুন সাধারণ পাসপোর্টের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া চলছিল। ৩ অক্টোবর তিনি ও তার স্বামী সৈয়দ ইশতিয়াক হোসেন পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আবেদন করেন এবং ১০ অক্টোবর তাদের আঙুলের ছাপ ও আইরিশ ছবি নেওয়ার কথা ছিল। তবে অভিযোগ উঠেছে— তারা বাড়িতে বসেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, শিরীন শারমিন অসুস্থতার কথা জানিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছেন।
পাসপোর্ট আবেদন অনুযায়ী, আঙুলের ছাপ ও আইরিশ ছবি নেওয়ার জন্য আবেদনকারীকে পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হতে হয়, তবে শারীরিক প্রতিবন্ধী বা অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়। এসব ব্যক্তিদের জন্য পাসপোর্ট অফিসের মোবাইল টিম বাসায় গিয়ে আঙুলের ছাপ ও আইরিশ সংগ্রহ করে। তবে, শিরীন শারমিনের বর্তমান ঠিকানা, যা তিনি আবেদনপত্রে উল্লেখ করেছেন, সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এছাড়া, পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. ফিরোজ সরকার বলেন, এটি আমার এখতিয়ারের বাইরে। তবে তিনি জানান, বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তাদের দায়িত্ব এবং তারা এর বিষয়ে জানাবেন।
পাসপোর্ট অধিদফতরের (ডিআইপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিরীন শারমিনের বর্তমানে কোনো সচল পাসপোর্ট নেই। তার কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করা হয়েছে এবং তিনি ১.৫ মাস আগে কূটনৈতিক পাসপোর্ট জমা দিয়ে সাধারণ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে তার নতুন পাসপোর্ট এখনও ইস্যু হয়নি এবং আবেদন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।