পটুয়াখালী প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হান ওরফে রিমন সহযোগীদের নিয়ে গত ২২ মার্চ যে ঘটনা ঘটিয়েছে তা ফ্রি-ফায়ার ও পাবজি দেখার ফল। ওই গেমস দেখেই সে মারামারিতে আসক্ত হয়।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানান সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ওই ঘটনায় গ্রেফতার রায়হান ফ্রি-ফায়ার ও পাবজি গেমসে আসক্ত ছিল। গেমসে মারামারি দেখেই সে নৃশংস কাজে উৎসাহিত হয়েছে।
কমান্ডার মঈন বলেন, ২২ মার্চ ক্লাস বিরতির সময় ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সৈকত ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারুফের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।এর মধ্যেই নবম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী রায়হান এগিয়ে এসে সৈকতের পক্ষ নিয়ে মারুফ ও তার সহপাঠী নাফিজ, সিয়ামসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে দুপুরে টিফিনের বিরতির সময় রায়হান দশম শ্রেণির মারুফসহ কয়েকজনকে হুমকি দেয়। ওই ঘটনার চার দিন আগে সকালে মারুফের বন্ধু সিয়াম ও রায়হানের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। দুই ঘটনার জেরে ২২ মার্চ স্কুল ছুটির পর রায়হান দলবল নিয়ে মারুফ,সিয়াম,নাফিজসহ অন্যদের অনুসরণ করতে থাকে। মারুফ, সিয়াম, নাফিজসহ অন্যরা স্কুল থেকে পাংগাশিয়া ব্রিজের কাছাকাছি গেলে রায়হানের নেতৃত্বে সাইদুর ওরফে সৈকত, হাসিব ওরফে হৃদয়, নাঈম হোসেন,সিফাত ও মশিউর মিলে তাদের মারধর শুরু করে।
এ সময় সিয়াম,মারুফ ও নাফিজকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে রায়হান। এতে গুরুতর আহত সিয়াম,নাফিজ ও মারুফকে প্রথমে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মারুফ ও নাফিজকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা মারুফ ও নাফিজকে মৃত ঘোষণা করেন।
খন্দকার মঈন জানান, ঘটনার পর রায়হান ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে বাড়িতে যায়। সেখানে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি পানি দিয়ে পরিষ্কার করে। পরে বাউফলের ধুলিয়া লঞ্চঘাট থেকে লঞ্চে করে ঢাকায় আসে। লঞ্চে আসার সময় ছুরিটি নদীতে ফেলে দেয়। এরপর সে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে নরসিংদীর রায়পুরায় পরিচিত এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করে। আর হাসিব ওরফে হৃদয় হত্যাকাণ্ডের পর পালিয়ে পটুয়াখালী থেকে বাসে ঢাকায় এসে পলবীতে এক আত্মীয় বাসায় আত্মগোপন করে। পরে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৩ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করে।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, রায়হান ওরফে রিমন ও হাসিবুল ওরফে হৃদয় পাঙ্গাশিয়া এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য গ্যাং তৈরি করেছে। তারা সব সময় ছুরি, চাকুসহ বিভিন্ন অস্ত্র বহন করত। এলাকায় মারামারিসহ বিভিন্ন ঘটনায় জড়িত তারা। এলাকার কিশোরদের বিভিন্ন অপরাধে উৎসাহ দিত তারা।