বৈরুতে বিস্ফোরণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরও এক তরুণের মৃত্যু

লেবাননের বৈরুতে বিস্ফোরণের ঘটনায় মারা গেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার রাসেল মিয়া (২৩) নামে এক রেমিটেন্স যোদ্ধা। এ সময় আহত হন রাসেলের বড় ভাই সাদেক মিয়া।

এ ঘটনায় কসবা উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের জাজিসার গ্রামের বাড়িতে চলছে আহাজারি। ছেলের জন্য বিলাপ করে কিছুক্ষণ পরপর জ্ঞান হারাচ্ছেন রাসেলের মা পারুল বেগম। নির্বাক হয়ে গেছেন তার বাবা। নিহত রাসেল ওই গ্রামের মুর্শিদ মিয়ার ছেলে।

রাসেলের মা-বাবাকে সমবেদনা জানাতে বৃহস্পতিবার দুপুরে ছুটে গেছেন কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম। উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাউসার ভূইঁয়া জীবনও নিহত রাসেলের বাড়িতে গিয়ে তার মা-বাবাকে সমবেদনা জানিয়েছেন।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৪ বছর আগে জীবিকার তাগিদে লেবাননে যান রাসেল মিয়া। বৈরুতে বিস্ফোরণস্থল থেকে আধা কিলোমিটার দূরে একটি পেট্রল পাম্পে কাজ করতেন রাসেল ও তার বড় ভাই সাদেক মিয়া। মঙ্গলবার বিকালে বিস্ফোরণের সময় সেখানেই কর্মরত ছিলেন তারা। ঘটনা পর দেশ থেকে পরিবারের লোকজন একাধিকবার ফোন দিলেও কেউ ফোন রিসিভ না করায় বাড়িতে কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়।

নিখোঁজ হয়ে যায় রাসেল, তার ভাই ও তার ফুফাতো ভাইসহ কয়েকজন। হাসপাতালে প্রায় ৭/৮ ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরে পায় রাসেলের বড় ভাই সাদেক মিয়া। তিনি তখন ফোন রিসিভ করে রাসেলের খোঁজ নেই বলে বিস্তারিত জানান। খবর পেয়ে লেবাননের অন্য এলাকা থেকে ছুটে আসেন রাসেলের চাচা জসিম উদ্দিন। চাচা জসিম উদ্দিন ও বড় ভাই সাদেক মিয়া বিভিন্ন হাসপাতালে খুঁজতে থাকেন রাসেলসহ অন্য স্বজনদের।

বুধবার বিকালে একটি হাসপাতালের মর্গে খুঁজে পান রাসেলের লাশ। পরে ওই শহরের অপর একটি হাসপাতালের মর্গে মিলে নিহত রাসেলের আপন ফুফাতো ভাই ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর গ্রামের রেজাউলের লাশ। চিকিৎসাধীন খুঁজে পান রাসেলের ভগ্নিপতি গোলাম রসুলকে। একই ঘটনায় ছেলে ও ভাগ্নের মৃত্যুতে বাড়িতে চলছে শোকের আহাজারি।

নিহত রাসেলের মা পারুল বেগম কান্নাজড়িত গলায় বলেন, সরকার যেন তার মৃত সন্তানের লাশ ও আহত সন্তানকে দ্রুত দেশে আনার ব্যবস্থা করে তার বুকে ফিরিয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম বলেন, বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। খবর পেয়ে তাদের বাড়িতে গিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমবেদনা জানিয়েছি।

তিনি বলেন, নিহতের পরিবারের লোকজনকে সান্ত্বনা দেয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন নিহত ও আহতদের দেশে আনার ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে