রাজশাহী প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রায়হান আলীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (১৯ আগস্ট) দিবাগত গভীর রাতে নিহতের সহোদর মো. রানা ইসলাম বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও নগরীর চন্ডিপুর এলাকার যুবলীগ নেতা জহিরুল ইসলাম রুবেলসহ ৫০ জনের নাম আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ১ হাজার ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নাম উল্লেখ করা আসামিদের মধ্যে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১২, ১৩, ১৪, ১৭, ১৯, ২১ ও ২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পুলিশের একজন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা রয়েছেন। অন্য আসামিরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মী। ঘটনার দিন আসামিদের হামলায় গুরুতর আহত ৫ জনসহ ২১ জন প্রত্যক্ষদর্শীকে সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট বেলা অনুমান ১২টা সাড়ে ১২টার দিকে ভিকটিম রায়হান আলী ও সাক্ষীসহ প্রায় ২ হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে তালাইমারী থেকে শহরে আসছিল। মিছিলটি নগরীর আলুপট্টি এলাকার স্বচ্ছ টাওয়ারের সামনে আসলে নেতাকর্মীরা জানতে পারেন আসামিরা কুমারপাড়ায় ধলীয় অফিসের সামনে সমাবেশ করেছে। সেখানে মেয়র লিটন আন্দোলনকারীদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। এ খবর শোনার পর সংঘাত এড়াতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা স্বচ্ছ টাওয়ারের সামনে দিয়ে মিছিল নিয়ে সাগরপাড়ার দিকে যাওয়ার সময় বেলা ১টা ১০ মিনিটের দিকে আসামিরা কুমারপাড়া থেকে ছাত্র জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে স্বচ্ছ টাওয়ারের সামনে এসে গুলি ও ককটেল হামলা শুরু করে। ফলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়, নেতাকর্মীরা ছাটাছুটি করতে থাকে।
এ সময় মেয়র লিটন, ডাবলু সরকারের নেতৃত্বে রুবেল, রাজীব, রনি, মোস্তফাসহ আসামিদের ছাত্র জনতার উপর গুলি করতে দেখা যায়। তাদের আক্রমণে মারুফ মর্তুজা, ইব্রাহীম আলী, মারুফ আল হাসান ও মেহেদী হাসানসহ অনেক ছাত্র গুলিবিদ্ধ হলে রায়হান আলী তাদের উদ্ধার করতে যান। এসময় আসামি জহিরুল হক রুবেল তার হাতে থাকা রিভলভার দিয়ে রায়হান আলীর মাথায় গুলি করে। পরে রায়হানসহ আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৮ আগস্ট সন্ধ্যায় রায়হান আলীর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত ও রাজশাহী কলেজ মাঠে জানাযা শেষে পরদিন রায়হান আলীকে নিজগ্রাম পুঠিয়ার মঙ্গলপাড়ার কবরস্থানে দাফন করা হয়।