
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধায় প্রসূতিকে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা না দেয়ায় রাস্তার পাশে সন্তান প্রসবের ঘটনায় দুই চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছে।
গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক আফসারী খানমকে লালমনিরহাট ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার সেকেন্দার আলীকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বদলি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন গাইবান্ধা জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের উপ-পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম ।
তিনি জানান, গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসক কর্তৃক বিতাড়িত হয়ে রাস্তার পাশে একটি পরিত্যক্ত ঘরে সন্তান প্রসবের ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী ঘটনার রাতেই স্বাস্থ্যকর্মী সেলিনা আক্তারকে সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউপি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলির আদেশ দেয়া হয়।
পরে দায়িত্বে অবহেলা করার দায়ে মঙ্গলবার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক আফসারী খানমকে লালমনিরহাট এবং মেডিকেল অফিসার ডা. মো. সেকেন্দার আলীকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বদলি করা করা হয়েছে। আফছারী খানম দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে গাইবান্ধার এই মা ও শিশু হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন।
গত ১২ আগস্ট রাতে ওই নারীর প্রসব বেদনা উঠলে স্বজনরা তাকে দ্রুত নিয়ে যান গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে (মাতৃসদন)। কিন্তু সেখানে তাকে ভর্তি না করে ফিরিয়ে দেন কেন্দ্রে কর্তব্যরতরা। পরে ঠাঁই না পেয়ে রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত ঘরে সন্তান প্রসব করেন ওই প্রসূতি।
স্বাস্থ্যকর্মীর অমানবিক আচরণে, রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত ঘরেই আলোর মুখ দেখে শিশুটি। পরে পুলিশ ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নবজাতকসহ মাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্বজনরা জানান, মঙ্গলবার (১৮ আগষ্ট) রাতে প্রসব বেদনা উঠলে গাইবান্ধার ফুলছড়ির বোনারপাড়া থেকে অন্তঃসত্ত্বা জেমি আক্তারকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যান তারা। হাসপাতালে পৌঁছার পর সেখানের পরিদর্শিকা সেলিনা বেগম অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে নিয়ে অন্যত্র যেতে বলেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও কর্ণপাত না করে উল্টো গালমন্দ করে বের করে দেয়া হয় তাদের। পরে শহরের ডিবি রোডের পাশে পরিত্যক্ত ঘরে মেয়ে সন্তান প্রসব করেন ওই প্রসূতি।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে, চড়ও মেরেছে। পরে এলাকাবাসী ও পুলিশের সহযোগিতায় অসুস্থ অবস্থায় মা ও শিশুকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।