
মাঠ-মাঠে ডেস্ক:
আকবর আলী, তৌহিদ হৃদয়, অভিষেক দাস, তানজিদ হাসান তামিম, মাহমুদুল হাসান জয়, পারভেজ হোসেন ইমন, শামিম হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব, সাহাদাত হোসেন, শরিফুল ইসলাম, রাকিবুল হাসানরা নিজেদের খানিক দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন।
ভারতীয় যুবাদের হারিয়ে যুব বিশ্ব ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর কোথায় নিজেদের ছাপিয়ে আরও ওপরে উঠবেন, নৈপুণ্যের দ্যুতিতে মাঠ মাতিয়ে আরও সবার নজর কাড়বেন-তা না। সে অর্থে তাদের আর মাঠেই নামা হয়নি। কেউ কেউ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচ খেলেছেন। অনেকের সে সুযোগও হয়নি। কেউ ব্যাটিং পেয়েছেন কি পাননি, আবার কারও বোলিং করার সুযোগও মেলেনি। মোদ্দা কথা, সবাই নিজ নিজ ক্লাবের প্রথম একাদশে জায়গা পাননি। ফলে ক্লাব ক্রিকেটের বড় আসর প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচে যুব বিশ্বকাপ বিজয়ী যুবাদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশের মাঠে নামা হয়নি। শুধু ক্লাব ক্রিকেট কেন, করোনার কারণে আকবর আলী বাহিনীর আর কেউ সে অর্থে ক্রিকেটীয় কর্মকান্ডে অংশ নিতে পারেননি। অথচ তাদের নিয়ে কত স্বপ্ন দেশবাসীর। বিসিবিও বিশ্ববিজয়ী যুবাদের নিয়ে কত পরিকল্পনাই না করেছে! বিশ্ব যুব ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়নদের সবাইকে প্রতি মাসে এক লাখ টাকা করে মাইনে দেয়া হচ্ছে। তারা মার্চ মাস থেকে তা পাচ্ছেনও। যুবাদের বিদেশি কোচের অধীনে বিশেষ ট্রেনিং করানো হবে, তাদের একটা সেটআপে ধরে রেখে বাইরে খেলতে পাঠানোর পরিকল্পনার কথাও বলা হয়। কিন্তু করোনা সব থামিয়ে দিয়েছে। যুবাদের কোনোরকম ট্রেনিং কার্যক্রমেও অংশ নেয়া হয়নি। তারা নিজেদের উদ্যোগে যার যার মত করে ফিজিক্যাল ট্রেনিং করছেন, কেউ কেউ বোলিং-ব্যাটিংটাও ঝালিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু টিম প্র্যাকটিস বা দল বেঁধে একজন ভালো কোচের অধীনে রুটিন ট্রেনিং শিডিউল মেনে নিজেদের প্রস্তুত করার সুযোগ আর জোটেনি। সবাই ক্রিকেটকে মিস করছেন। অবশেষে সোনার ছেলেদের অপেক্ষার পালা শেষ হতে যাচ্ছে। ভেতরের খবর, আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহে এইচপির যে বহর শ্রীলঙ্কায় ট্রেনিং করতে এবং লঙ্কান একাডেমি ও হাই পারফরমেন্স ইউনিটের সাথে সিরিজ খেলতে যাবে, সেখানে বিশ্ববিজয়ী যুবাদের একটা বড় অংশ থাকছে। উড়ো থেকে পাওয়া খবর নয়। ক্রিকেট পাড়া ও বিসিবির আশপাশে ভেসে বেড়ানো গুঞ্জন নয়। জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর দেয়া খবর।
এনিয়ে মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেন, ‘আমরা হাই পারফরমেন্স ইউনিটে (এইচপি) ২৬ জনের দল পাঠাতে যাচ্ছি শ্রীলঙ্কায়। তারা আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে জাতীয় দলের সাথে শ্রীলঙ্কা সফরে যাবে।’
নান্নু আরও জানান, সেই ২৬ জনের ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ক্রিকেটারই থাকবেন বিশ্ববিজয়ী যুব দলের সদস্য। কারো নাম উল্লেখ না করে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘অন্তত ১২ থেকে ১৪ জনকে রাখার চিন্তাভাবনা আছে। এখনো আমরা এইচপি স্কোয়াড চূড়ান্ত করিনি। আশা করছি আগামী দু’ থেকে তিন দিনের ভেতরে স্কোয়াড চূড়ান্ত হয়ে যাবে। তবে এটা ঠিক যে, বিশ্ব যুব ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হওয়া বহরের বড় অংশই থাকবে এইচপিতে। তারা শ্রীলঙ্কা গিয়ে আবাসিক অনুশীলন করবে। পরে লঙ্কান একাডেমি আর হাই পারফরমেন্স ইউনিটের সাথে ম্যাচ খেলবে।’
প্রধান নির্বাচকের কথায় মনে হয়েছে অধিনায়ক আকবর আলী, সহঅধিনায়ক তৌহিদ হৃদয়, তানজিদ হাসান তামিম, মাহমুদুল হাসান জয়, পারভেজ হোসেন ইমন, শামিম হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব, সাহাদাত হোসেন, শরিফুল ইসলাম ও রাকিবুল হাসানের ঐ দলে থাকা প্রায় নিশ্চিত। এর বাইরে আরও তিন-চারজন আছেন বিশেষ বিবেচনায়। তারাও থাকবেন। এদের সঙ্গে আগের বছর এইচপিতে ট্রেনিং করা আরও ১২-১৪ জন ক্রিকেটার যুক্ত হবেন। এর মধ্যে ৮ জন এইচপির নিয়মিত সদস্য হিসেবেই আছেন। তাদের শ্রীলঙ্কা যাওয়া নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন নান্নু।