
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রথম দিকে ভালোই সাফল্য দেখিয়েছিল সিঙ্গাপুর। কিন্তু পরে সেই সফলতায় ছেদ পড়েছে।
ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে চীনা পর্যটকদের দিয়ে করোনা সংক্রমিত হয় সিঙ্গাপুরে। সেই সময় কয়েকজন বাঙালিও আক্রান্ত হন।
তবে দেশটির সরকার সময়পোযোগী সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুত পরিস্থিতি এমনভাবে নিয়ন্ত্রণে আনে, যা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হচ্ছিল।
তবে এ প্রশংসা বেশি দিন টেকেনি। ফের করোনা আঘাত হেনেছে দেশটিতে। দ্বিতীয় দফার দেশটিতে করোনা রোগীর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল এক হাজারে। অথচ মার্চের শুরুতেও দেশটিতে সংখ্যাটি ছিল একশরও কাছাকাছি।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, দ্বিতীয় দফায় করোনাকে আর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি সিঙ্গাপুর। তবে এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ নিলে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে পারবে তারা। এ জন্য প্রথম ঢেউ মোকাবেলায় সফলতা অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজে লাগাতে পারে।
যদিও সিঙ্গাপুর সরকার বলছে, প্রথম দফার মতোই কড়াকড়ি আরোপ চলছে সেখানে। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে কোনো ছাড় দেয়া হচ্ছে না নিষেধাজ্ঞায়। চীনফেরত নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার পর দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, ইরানসহ করোনার প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্ত সব দেশ থেকে প্রবেশ নিষিদ্ধ রেখেছে তারা।
তবু কেন করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে পারছে না সিঙ্গাপুর?
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিঙ্গাপুরে ফের করোনাভাইরাস নিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য থেকে ফেরা নাগরিকরা। আর তাদের মাধ্যমে ভাইরাসটি সংক্রমণ দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে।
সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কাও সামলে নেবেন তারা। সে জন্য সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধ জোরদার করেছে প্রশাসন। ২৩ মার্চ থেকে সব ধরনের পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। রাস্তায় বের হওয়া নিয়ে আরও কঠোর হয়েছে। ২৭ মার্চ থেকে ১০ জনের বেশি লোককে একসঙ্গে দেখলে জরিমানা করা হচ্ছে। দোকান, রেস্তোরাঁগুলোতে ক্রেতাদের জটলা দেখলেও জরিমানাসহ সিলগালা করে দেয়ার মতো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
কিন্তু এর পরও করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে তারা।
প্রসঙ্গত জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্যানুযায়ী, এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে দেশটিতে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে অন্তত ৭৪ জন। ২ এপ্রিলে যোগ হয় আরও ৪৯ জন। এভাবে আশঙ্কাজনক হারে দেশটিতে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সিঙ্গাপুরে এ পর্যন্ত এক হাজার ৪৯ জনের শরীরে নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৫ জন। এদের মধ্যে গত ২ এপ্রিলেই ৪ জন মারা যান।