নিউজ ডেস্ক, এটিভি সংবাদ :
বন্যা আসার আগেই শেষ সম্বলটুকু বাঁচাতে হবে। তাই নিজেরাই ভাঙন ঠেকাতে ব্রহ্মপুত্র নদে গার্ডার নির্মাণ করছেন একটি গ্রামের মানুষ। গ্রামটি হলো জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার পোল্লাকান্দি মধ্যপাড়া গ্রাম। গ্রামবাসী জানান, ১৯৭৪ সাল থেকে ভাঙন চলছে। এরইমধ্যে ১০টি গ্রাম নদেরগর্ভে চলে গেছে। বাকি যা আছে সেটুকু চলে গেলে উপজেলার মানচিত্র থেকে এই গ্রাম মুছে যাবে।
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার পোল্লাকান্দি ইউনিয়ন। প্রতি বছর ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনে নিশ্চিহ্ন হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। এরইমধ্য নদেরগর্ভে চলে গেছে নয়াগ্রাম, ফাপাড়া, পোল্লাকান্দি মধ্যপাড়া, নামা পাড়া, সর্দারপাড়া,উফরাপাড়া, ভাটিরপাড়া গ্রাম। বিলীন হয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল ও দাখিল মাদ্রাসাসহ মসজিদ। এখন হুমকির মুখে আরও ৪ গ্রাম। একটি সরকারি স্কুল ও দাখিল মাদ্রাসাসহ ৫টি মসজিদ।
এবারের বন্যায় শেষ সম্বলটুকুও নদে বিলীন হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন গ্রামবাসী। বর্তমানে বেঁচে থাকার শেষ ঠিকানা ধরে রাখতে নিজেরাই ঝাঁড়ের বাঁশ ও নগদ টাকা দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে ৯০ ফিট করে ৭টি বাঁশে গার্ডার তৈরি করে পানির প্রবাহকে থামানোর চেষ্টা করছেন।
এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার আহম্মদ আলী বলেন, ‘১৯৭৪ সাল থেকে এখানে ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য মন্ত্রী-এমপি, এমনকি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছেও আবেদন নিবেদন করে ব্যর্থ হয়েছি। কেউ ভাঙন রোধে এগিয়ে আসেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাড়িঘর, ফসলি জমি, স্কুল-মাদ্রাসা ও মসজিদসহ ১০টি গ্রাম নদের গর্ভে চলে গেছে। আর ৪টি গ্রাম আছে যেখানে সবাই বসবাস করছি। আশঙ্কা করছি, সামনের বন্যায় সেটুকু শেষ হয়ে যাবে।’
গ্রামবাসী বন্যা আসার আগেই দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে সরকারের কাছে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ভাঙন প্রতিরোধে প্রতিরক্ষা ও প্রতিরোধেমূলক কাজ বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, ‘প্রতিবছরই এখানে ভাঙন চলছে। এতে প্রতি বছরই ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলবো। চেষ্টা করছি একটি বরাদ্দ আনতে পারলে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করবো।’
গত অর্ধশত বছরে ভাঙনে বিলীন হয়েছে ১০টি গ্রাম ও শত শত একর ফসলি জমি।