অনলাইন ডেস্ক, এটিভি সংবাদ
টানা প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৭৮ জনে। এ ছাড়া ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ জনে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে। এদিকে, অবরুদ্ধ গাজায় পানিও শেষ হয়ে গেছে। এতে মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ উপকূলীয় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আহত হয়েছে ১২ হাজারের বেশি মানুষ। পশ্চিম তীরে আহতের সংখ্যা ১৩০০ এর বেশি।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশই শিশু। বাকিদের বেশিরভাগই নারী। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গাজায় নিহতদের মধ্যে এক হাজারের বেশি শিশু রয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কেদরা এক সংবাদ সম্মেলনে ‘চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের গুরুতর পরিণতির’ ওপর জোর দেন। আল-কেদরা জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘটিত গণহত্যার ধারাবাহিকতা জাতিগত নির্মূলের মতো কাজ এবং এটি ফিলিস্তিনি অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।
এর আগে, মঙ্গলবার গাজার কেন্দ্রে অবস্থিত আল আহলি আরব হাসপাতালে ইসরায়েলের হামলায় ৫ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালটিতে অসংখ্য আহত ও অসুস্থ মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এছাড়া দখলদার ইসরায়েলিদের হামলা থেকে বাঁচতেও অনেক মানুষ ‘নিরাপদ আশ্রয়’ ভেবে হাসপাতালটিতে অবস্থান নিয়েছিলেন। ইসরায়েল শুরু থেকেই সাধারণ মানুষের ওপর হামলা করছে। জাতিসংঘের স্কুল, হাসপাতাল, আশ্রয়কেন্দ্র এমনকি জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার গুদামেও বোমা ফেলেছে ইসরায়েল। এসব তথ্য জানিয়েছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা, রেডক্রসসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকার হাসপাতালের ওপর এ হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ইসরায়েল অবশ্য বিমান হামলার দায় অস্বীকার করেছে। তবে বুধবারের এই পরিসংখ্যানে হাসপাতালে বোমা হামলার হতাহতের সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।
এসোসিয়েট প্রেস বুধবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, গাজা উপত্যকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব স্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, গাজার পানি ফুরিয়ে যাচ্ছে এবং গাজার জীবন ফুরিয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ বলছে, পানি সরবরাহ মানবাধিকারের অংশ এবং এটি মৌলিক চাহিদার একটি। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য পানির সরবরাহ প্রয়োজন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গাজায় ‘ব্যাপক মানবিক দুর্ভোগ’ কমাতে ‘অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানিয়েছেন।