সৈকত মনি, এটিভি সংবাদ
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অধীনস্থ দক্ষিণখান ও উত্তরখান এলাকার ৮১ কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণকাজ ৩০ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা জানিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কাউন্সিলররা আমাকে জানিয়েছেন বেশ কিছু জায়গায় অবৈধ দখল করে রেখেছে। নিজেরা দখলমুক্ত না করলে স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর দক্ষিণখানে চলমান উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা জানান।
মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ডিএনসিসিতে নতুনভাবে যুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের অন্তর্গত দক্ষিণখান, উত্তরখান ও হরিরামপুর এলাকার ৮১ কিলোমিটার রাস্তা ও ড্রেনেজ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে।
রাস্তা ও ড্রেনেজ নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে তিনি এলাকাবাসীর সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি এলাকাবাসীর সমস্যার কথা শোনেন এবং সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করেন।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে এই এলাকায় বিভিন্ন সমস্যা বিরাজ করছে। এই এলাকা এক সময় ইউনিয়ন ছিল। তখন নির্মিত সব রাস্তাগুলো সরু। কখনো ড্রেনে নির্মাণ করা হয়নি। টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে সিটি করপোরেশন প্রশস্ত রাস্তা ও ড্রেনেজ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। দ্রুত সময়ে কাজ সম্পন্ন করার দিন রাত কাজ চলছে। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ৮১ কিলোমিটার রাস্তা, ড্রেনেজ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে। এছাড়াও এই এলাকায় ৫ হাজার ৭২২টি এলইডি স্মার্ট লাইট স্থাপন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কাউন্সিলররা আমাকে জানিয়েছেন বেশ কিছু জায়গায় অবৈধ দখল করে রেখেছে। কেউ কেউ রাস্তার জমি দখল করে রেখেছে। অনেকে খালের উপরে ভবননির্মাণ করছে। আমি সবাইকে সাবধান করে দিচ্ছি— আপনারা নিজ দায়িত্বে অবৈধ দখলমুক্ত করে দিন। নিজেরা ছেড়ে না দিলে আমরা উচ্ছেদ অভিযান করে অবৈধ স্থাপন ভেঙে দেবো।
মেয়র আরও বলেন, বিগত ৫০ বছর এই এলাকার মানুষ কষ্ট করেছে। আগামী ৫০ বছর যেন কোনো কষ্ট না হয় সেই লক্ষ্যে আমরা টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করছি। আমি উত্তরায় থাকি, এই এলাকার মানুষের কষ্ট আমি জানি। এখানে অনেক শাখা, গলি রাস্তা রয়েছে যেগুলো অনেক সরু। কোনো অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারে না। আমি সবাইকে অনুরোধ করছি আপনারা গলির রাস্তাগুলো ২০ ফুট প্রশস্ত করার জন্য জায়গা ছেড়ে দিন।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে মেয়র হয়েছি। তাই জনগণের প্রতি আমার জবাবদিহিতা রয়েছে। জবাবদিহিতা আছে বলেই আমি আজ এসেছি। দীর্ঘ ৫০ বছর আপনারা ধৈর্য ধরেছেন। আর অল্প কিছুদিন কষ্ট করে ধৈর্য ধরুন। নভেম্বরের মধ্যে এই এলাকার রাস্তার উন্নয়ন নিশ্চিত করবো। জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান হবে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, এই এলাকায় অনেক খাস জমি রয়েছে। এসব খাস জমিতে খেলার মাঠ ও পার্ক নির্মাণ করা হবে। খাস জমি ব্যক্তিগতভাবে কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। খাস জমি উদ্ধার করে মাঠ ও পার্ক নির্মাণের জন্য যা যা করণীয় তাই করবো।
মতবিনিময় শেষে ডিএনসিসি মেয়র পুরো দক্ষিণখান এলাকার রাস্থা ও ড্রেনের চলমান নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য খসরু চৌধুরী, ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, কাউন্সিলর মোতালেব মিয়া, মো. জাইদুল ইসলাম মোল্লা, মো. আলী আকবর, মো. আনিছুর রহমান নাঈম, ডি এম শামিম, মো. শফিকুল (শফিক), জয়নাল আবেদীন, ইলোরা পারভীন ও জাকিয়া সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Copyright © 2023 Atv Sangbad (A Concern of Aparadh Anusondhan Ltd) All rights reserved