নিজস্ব প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
জাতীয় পার্টি থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, রওশন এরশাদকে বিরোধী দলীয় নেতা থেকে সরাতে স্পিকারকে চিঠি দেয়াটা অন্যায় হয়েছে, এটা আমি একটা গণমাধ্যমে বলায় উনি (জি এম কাদের) আমাকে প্রেসিডিয়াম থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেতাকে সরাতে একটা এজেন্ডা দিতে হয়। কাদের সাহেব সভাপতি, তিনি এই চিঠিতে সাক্ষর করবেন। তা না করে আমাকে বললেন, তুমি সাক্ষর করে দাও, তার কথা আমি শুধু পালন করেছি।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রাঙ্গা বলেন, আমি চাই দল না ভাঙ্গুক। এরশাদ সাহেব না থাকার কারণে জি এম কাদের রওশন এরশাদের সঙ্গে বসে মীমাংসা করুক। এজন্য যদি আমাকে দল থেকে মনোনয়ন নাও দেয়া হয় তাতে আমি কষ্ট পাব না। এসময় তিনি দল থেকে অব্যাহতি প্রতাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, আমি একটা দল করবো, কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে দল থেকে বাদ দিয়ে দেবে তা কখনো হতে পারে না।
তিনি বলেন, সুষ্ঠুভাবে যদি জাতীয় পার্টি চলতে না দেয়া হয়, গণতান্ত্রিক উপায়ে যদি চলতে দেয়া না হয় তাহলে আমি এই দলের সঙ্গে আর থাকবো না। অন্য কোনো দলও আমি আর করবো না। পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গেই থাকব।
রওশন এরশাদকে আমি মায়ের থেকেও বেশি শ্রদ্ধা করি জানিয়ে তিনি বলেন, সংসদীয় বিরোধী দলের নেতা থেকে তাকে সরানোর চিঠিতে বিরোধী দলীয় চিফের স্বাক্ষর আমি করেছি। আমাকে তিনি ভুল বুঝেছেন।
আমাকে যা বলা হয়েছে তাই করেছি। ওইদিন আমি শক্ত অবস্থানে থাকলে নতুন চিফ হুইপ সিলেক্ট করে তাকে দিয়ে করাতে পারতাম, তা আমি করিনি।
দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে ঝগড়া করে কখনো টিকে থাকা যায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সব থেকে বেশি আসন ছিলো রংপুরে। আমি চেয়ারম্যান সাহেবকে বলেছিলাম রংপুরের ২২ টি আসনের মধ্যে আমি যদি ২১ আসন আপনাকে এনে দিতে না পারি তাহলে আমি দল করবো না, রিটায়ার্ড দিয়ে চলে যাব। আমাকে শুধু দায়িত্ব দেন। জি এম কাদেরের সঙ্গে সারাদিন মৌমাছির মতো কিছু লোক থাকে আর কু-পরামর্শ দেয়।
জাতীয় পার্টি বিএনপির দিকে ঝুঁকছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দলের প্রেসিডিয়াম ও কো-চেয়ারম্যান আছেন, তারা এই সিদ্ধান্ত নেবেন। আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমরা সিট ভাগাভাগি করে আসছিলাম। এরশাদ সাহেবও তাই করেছেন। ইদানিং আমরা ২-৩ মাস ধরে লক্ষ্য করছি, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করছে, যার সব কিছুতেই বিরোধী দলের আপত্তি। আমাদের একজন মহিলা এমপিকে ডেকে দলের একজন বলেছে, যদি তুমি পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে যাও তাহলে তোমাকে নোমিনেশন দেয়া হবে না। আমি তার নাম বলবো না। উপরে থুতু ফেলতে চাই না।
তিনি আরও বলেন, একটা দল যদি ৮ বার ভাঙ্গে তাহলে সেই দলে কি অবস্থা বিরাজ করে। আমার মনে হয় আগামী দিনে দুটি দল বাদে আর কোনো দল থাকবে না। কোন দুটি দল তা আমি বলবো না, জাতীয় পার্টি তার মধ্যে নেই। আমাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, এতে আমি অসুখী নই।