ওয়াহিদ আব্দুল্লাহ রাজিব, এটিভি সংবাদ
জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার আল-আমিন হোসেনের বিচার চেয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সামনে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছেন স্ত্রী ইসরাত জাহান।
রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় মিরপুর ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে তিনি এই মানববন্ধন করেন।
ইসরাত জাহান বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানাই যে তিনি একজন মা, আমার দুটি বাচ্চাকে নিয়ে কোথায় যাব? তার কাছে সাহায্য চাই। তিনি যেন সুষ্ঠু বিচার করে দেন।
আল আমিন কোনো খরচ দিচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমার ফ্যামিলি আমাকে চালাচ্ছে। পুলিশের সাহায্যে আল-আমিনের বাসায় আছে। বিসিবি’র কাছে দেওয়া চিঠিতে আল আমিনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তার স্ত্রী।
ইসরাত জাহানের আত্মীয় মেহেদি বলেন, বিসিবি যেহেতু আল আমিনের অভিভাবক। তারা যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমরা তার সঙ্গে একমত হব। পুলিশ আল আমিনকে খুঁজছে। তার মোবাইল বন্ধ, তাকে ট্র্যাকিং করা যাচ্ছে না।
জানা গেছে, ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে আল-আমিন হোসেনের সঙ্গে ইসরাত জাহানের বিয়ে হয়। এ দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে এ পর্যন্ত পারিবারিক বিষয় নিয়ে আল-আমিন তার স্ত্রী ইসরাতের কাছে ফ্ল্যাটের মূল্য পরিশোধ বাবদ ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন।
ইসরাতের বৃদ্ধ বাবা দাবি করা যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আল-আমিন তাকে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেন। বেশ কয়েকবার মারধর করার পর তিনি (ইসরাত) আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নেন। কিন্তু দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পারিবারিকভাবে আপস-মীমাংসা করে নেয়। এতে আল-আমিন শান্ত না হয়ে দিনের পর দিন তার ওপর অত্যাচারসহ শারীরিক নির্যাতন করে।
গত ২৫ আগস্ট আল-আমিন তার স্ত্রীর কাছে যৌতুকের দাবি করা টাকা নিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। তার স্ত্রী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে।
আল-আমিন জানান, তার (ইসরাত) সঙ্গে সংসার করবে না, তাকে তালাক দেবেন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দেন। পরে ইসরাতের চাচা তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করে। চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরলে আল-আমিন তার সঙ্গে আগের মতো আচরণ করতে থাকেন।
গত বৃহস্পতিবার আল আমিন হোসেনের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় তার স্ত্রী একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর ইসরাত জাহানের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার মামলা আকারে নথিভুক্ত হয়। তারপর থেকেই ক্রিকেটার আল-আমিনকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। স্ত্রীর মামলার পর এই পেসারকে গ্রেফতারে পুলিশ কাজ শুরু করায় বাসা থেকে পালিয়েছেন সে।