সৈকত মনি, এটিভি সংবাদ
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম একনেক সভায় অনুমোদন পেতে পারে আট প্রকল্প। পাঁচ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকার ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী- কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য ‘ভূমি অধিগ্রহণ’ শীর্ষক সংশোধনী প্রকল্পসহ আট প্রকল্প উঠছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায়। আগামী (১৮ সেপ্টেম্বর) বুধবার ড. ইউনূসের প্রথম একনেক সভায় এসব প্রকল্প অনুমোদন পেতে পারে বলে পরিকল্পনা কমিশনের একনেক উইং সূত্রে জানা গেছে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সভায়। একনেক সভায় সভাপতিত্ব করবেন একনেক চেয়ারপারসন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারের এটিই প্রথম একনেক সভা।
পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) খন্দকার আহসান হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, একনেক সভা ১৮ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। তবে এবারের একনেক সভা আমাদের কমিশনে হবে না কারণ এখানে হলে আমরা চিঠি পেতাম। এবার উপদেষ্টার কার্যালয়ে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নেওয়া ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য ‘ভূমি অধিগ্রহণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৮ সালে একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রকল্পের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণের জন্য তখন খরচ ধরা হয় এক হাজার ৮৬৭ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। একনেকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পটি শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু নানা জটিলতায় নির্ধারিত মেয়াদে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়নি।
পরবর্তী সময়ে প্রকল্পের মেয়াদ প্রথম দফায় ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে ব্যয় বাড়ানো হয়নি। কিন্তু এরপরও কাজ শেষ না হওয়ায় আবারও দুই বছর সময় বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। তাতেও কাজের খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। ফলে নতুন করে দুই বছর সময় বাড়ানোর প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায় বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ। এতে প্রকল্পের ব্যয় ২২৩ শতাংশ বাড়িয়ে ছয় হাজার ৫০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
প্রস্তাবের ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রকল্পের নানা খাতের ব্যয় কমিয়ে পাঁচ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা নির্ধারণ করে একনেক সভায় উত্থাপনের জন্য সুপারিশ করে।
সংশোধনী প্রস্তাবনার নথি থেকে জানা যায়, বর্তমানে ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধি, সার্ভে ও ইউটিলিটি স্থানান্তর খাতে ব্যয় বৃদ্ধি এবং বাস্তবায়ন মেয়াদ দুই বছর বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়।
প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ৩০২.৭০ একরের পরিবর্তে ৮৬০.৬২২ একর নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জন্য এ খাতে চার হাজার সাত কোটি ৭২ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ ছাড়া ইউটিলিটি খাতে ১৭৩ কোটি এবং সার্ভে খাতে এক কোটি ২০ লাখ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এ জন্য ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।