ক্রীড়া ডেস্ক, এটিভি সংবাদ
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর ঘোষণা গত ৬ জুলাই দিয়েছিলেন বাংলাদেশের তারকা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। কিন্তু পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধে আবারও জাতীয় দলে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। তবে এবার তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়ে ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) নাজমুল হাসান পাপন ও বিসিবির অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তামিম ইকবাল।
গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবাল বলেন, ‘দলের কথা চিন্তা করে অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর এ বিষয় নিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, বুঝিয়ে বলেছি। প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন। তাছাড়া জালাল ভাই ও পাপন ভাইয়ের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
তামিম আরও বলেন, ‘চোটের কথা বিবেচনায় রেখে দলের ভালোর জন্য আমি নেতৃত্ব ছাড়ছি। এই মুহূর্তে আমি শুধু ক্রিকেট নিয়ে ভাবছি। সুস্থ হয়ে ফিরে ক্রিকেটার হিসেবেই খেলতে চাই।’
অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে তামিম আরও বলেন, ‘ভ্রমণটা দারুণ ছিল, ফলই কথা বলবে। আমি ভালো করেছি। তবে যদি অধিনায়ক থাকতাম, তাহলে স্বার্থপরের মতো হতো। যারা আমাকে চেনে, (তারা জানে) আমি সব সময় দলকে এগিয়ে রাখি। এটিই আমার হয়ে কথা বলবে।’
এদিকে লন্ডনে চিকিৎসা নিতে গিয়ে যে ইনজেকশন নিয়েছেন সেটার পরিপূর্ণ ফল পেতে তাকে আরও বেশ কিছুদিন বিশ্রামে থাকতে হবে। তার যে পুনবার্সন পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে, তাতে ২১ আগস্টের আগে পূর্ণ অনুশীলন শুরুই করতে পারবেন না তিনি। যার কারণে আগামী ৩০ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এশিয়া কাপে খেলা নিয়ে সংশয় এখনো কাটছে না। তাই কোনো ঝুঁকি না নিতে এবং শেষ সময়ের জন্য টানাপোড়েন না রাখতেই এশিয়া কাপে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তামিম। চাইলে অবশ্য খেলতে পারতেন, তাতে ভবিষ্যতে আরও বড় সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই বোর্ড সভাপতি পাপন ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালালের সঙ্গে আলোচনা করে এশিয়া কাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
জালাল ইউনুস বলেন,
তামিম পিঠের সমস্যায় অনেক দিন ধরেই ভুগছিল। এক বছরের ওপরে হবে চিকিৎসার জন্য বাইরে গিয়েছে, অনেক চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছে, কথা বলেছে। সম্প্রতি লন্ডনে চিকিৎসা নিয়েছে। সেখানে ধরা পড়েছে যে তার ডিস্ক (পিঠের নিচের অংশে) এল ফোর ও এল ফাইভে সমস্যা আছে। ওখান থেকে ব্যথাটা আসে। ওকে সেখানে দুই দফায় ইনজেকশন দেয়া হয়। ওর পরের যে চিকিৎসা, সেটা হলো ইনজেকশন দেয়ার দিন থেকে দুই সপ্তাহ বিশ্রামে থাকতে হবে। প্রথম সপ্তাহ পুরোপুরি বিশ্রাম, যেটি কালকে (শুক্রবার) পর্যন্ত। পরের সপ্তাহ ১১ তারিখ পর্যন্ত, এই সময় তাকে ছোটখাটো রিহ্যাব করতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে তার ইন্টেনসিটি ফেরাতে হবে। এখানেও দুই সপ্তাহ লেগে যাবে। ২১ তারিখের আগে ইন্টেনসিটি বাড়ানো যাবে না। এর পরে বাড়াতে হবে। কিন্তু এশিয়া কাপের জন্য আমাদের দল চলে যাবে ২৬ তারিখে। এজন্য তামিমের পক্ষে এশিয়া কাপে ফেরা সম্ভব হচ্ছে না।
এর মধ্যে আমরা ড. দেবাশিষ (বিসিবির প্রধান চিকিৎসক), বায়োজিদ (বিসিবির ফিজিও), তামিম ও বোর্ড সভাপতি, আমরা সবাই কথা বলেছি। তারাও পরামর্শ দিয়েছে, এশিয়া কাপে ওকে ফেরানোটা সম্ভব হবে না। সেজন্য এশিয়া কাপে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না, এটা এখনই বলে দিলাম। আমরা আশা করছি, নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগে সে ফিট হয়ে ওঠবে। এরপর বিশ্বকাপ। আমাদের ফিজিওরা এবং মেডিকেল টিম কাজ করবে, তাকে নিউজিল্যান্ড সিরিজ ও বিশ্বকাপে খেলার জন্য সবরকম সহায়তা করবে,’ যোগ করেন জালাল।
এশিয়া কাপে না থাকলেও ওয়ানডে বিশ্বকাপে দেখা যাবে ড্যাশিং এই ওপেনারকে। আর তামিমের আশা, ফিট হয়ে ফিরবেন বিশ্বকাপের আগে। খেলবেন নিউজিল্যান্ড সিরিজে।
এটিভি/এস