স্পোর্টস রিপোর্টার: মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দেশের ক্রিকেটের অর্ধেকের বেশি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। তবে এই মাঠের উইকেট নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। যা কি না সব সময়ই চলে। মূলত এই মাঠে বড় রান স্কোরিং দেখা যায় না ব্যাটারদের তুলনায় বোলারদের যেন আধিপত্য কয়েক গুণে বেশি। যেখানে গোটা বিশ্ব জুড়ে ব্যাটাররা তাণ্ডব চালায় ব্যাট হাতে সেখানে মিরপুরে এলেই তারা যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজে।
মিরপুরের উইকেট নিয়ে কিছুদিন আগে বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন এই উইকেটে এর থেকে বেশি কিছু করা সম্ভব নয়। উন্নতি করতে হলে কয়েক বছর খেলা অফ রাখতে হবে। তবে গতকাল গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান জানালেন আসন্ন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) বদলে যাবে উইকেটের চিত্র। এখানে দেখা যাবে ১৮০ থেকে ২২০ রানের ম্যাচ।
আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে মাঠে গড়াবে বিপিএলের দশম আসরের খেলা। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হবে তিন শহর মিলিয়ে (ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম)। তবে আসরের বেশি সংখ্যক ম্যাচ হবে মিরপুরেই। আর এইসব খেলাতেই হাইস্কোরিং ইনিংস দেখা যাবে। গতকাল শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলাপ কালে এ প্রসঙ্গে রকিবুল হাসান বলেন, ‘এই বছর উইকেট হবে ১৮০ থেকে ২২০ রানের টি-টোয়েন্টিতে। উইকেট ঐ ভাবেই তৈরি করে দেব আমরা। সিলেট-চট্টগ্রামের এবং ঢাকা। ব্যাটাররা যদি ব্যাটিং করতে না পারে তাহলে কিছু করার নেই। উইকেট থাকবে ফাস্ট বোলারদের জন্য। যে ভালো ব্যাটসম্যান সে রান করবে। যে ভালো বোলার সে উইকেট পাবে।’
এইবার বিপিএলের উইকেট নিয়ে কেউ সমালোচনা করতে পারবে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এইবার উইকেটে বাউন্স যতদুর রাখা যায় রাখবো, গ্রাস রাখব। এটার জন্য মিটিং করছি, গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে বলেছি এবার আপনারা উইকেটের ব্যাপারে নাক গলাতে পারবেন না। যেহেতু এই বছরও আমার দায়িত্ব রয়েছে গত বারের মতো। আইসিসির টুর্নামেন্ট, এসিসির টুর্নামেন্ট টেকনিক্যাল কমিটি ঠিক করে ম্যাচ রেফারি কে হবে আম্পায়ার কারা থাকবে উইকেট কীভাবে বানাবে ক্যামন হবে সব কিছু। তো আমরা খেলার স্বার্থে ঐ পথেই আগাব।’
অবশ্য এর আগে টাইগার দলের শ্রীলঙ্কান হেড কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের একহাত নেন সাবেক এই অধিনায়ক। দ্বিতীয় মেয়াদে আসা এই কোচকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘হাথুরুসিংহে তার একটি প্ল্যান নিয়ে চলে। এখন এটি বললে অনেকের কাছে খারাপ লাগতে পারে কিন্তু আমি পরিষ্কার করে দিই। কিছু কিছু কোচ আছে এরা বিভিন্ন দেশে যায় কিছু সময়ের জন্য যায়। অনেক টাকা ইনকামের জন্য এবং রেজাল্টের খোঁজে। এই রেজাল্ট খুঁজতে গিয়ে তারা শট-কাট রাস্তাটা খুঁজে নেয়। ঐ দেশের ক্রিকেট ভবিষ্যত নিয়ে খুব একটা ভাবে না। আমি তো দুই বছর পর চলে যাব। কি হবে না হবে পরের ব্যাপার। কিন্তু আমার সময়ে আমি এমন কিছু করি যেন একটা দুইটা ম্যাচ জিতে যায় যেন বলতে পারব যে আমার সময়ে এটা হয়েছে।’
কোচ হিসেবে হাথুরুর ভ্যালু নেই দাবি করে রকিবুল বলেন, ‘এটা আমি নির্দ্বিধায় বলব সে যে পরিমাণ আর্থিক সহযোগিতা নিচ্ছে আমাদের দেশ থেকে আপনারা সবাই হয়তো জানেন অঙ্কটা নাই বললাম। কত টাকার বেতনে রাখছি আমরা। সে যদি অতো বড় মাপের কোচই হতো তাহলে তো সে অস্ট্রেলিয়ার কোচ থাকতো, ইংল্যান্ডের কোচ থাকতো, সাউথ আফ্রিকার কোচ থাকতো। কিন্তু কেন নেই, তার তো ঐ ভ্যালু নেই কোচ হিসেবে, তাকে সম্মান রেখেই আমি বলছি।’
এ সময় কোচ হাথুরুর অনেক কমতি রয়েছে জানিয়ে রকিবুল আরও বলেন, ‘ক্রিকেটের ব্যাকগ্রাউন্ড শক্তিশালী না থাকলে খোলোয়াড়দের থেকে সম্মানও আদায় করতে পারে না একটা কোচ। আজকে যদি আপনি রিকি পন্টিংকে আনেন, সৌরভ গাঙ্গুলীকে আনেন একজন মেন্টর অথবা কোচ তার কোচিং লাগবে না তো তার যে মোটিভেশনাল কথা তার যে ব্যাকগ্রাউন্ড আছে সেটা দেখেই বা বলবে ওটা খাবে খেলোয়াড়রা। এ (হাথুরু) ঐ রকম লেভেলের খেলোয়াড়র না, ঐ রকম খেলেওনি সেটাতো ততটা কাজ করবে না। তারপরও কিছু কিছু জিনিস আছে ফাইনটিউনিং করা করতে হয়। কোচের কাজটা ফাইনটিউনিং করা, টিমের পরিবেশ ঠিক রাখা, অধিনায়ককে ম্যাচ টু ম্যাচ পরিকল্পনা করতে সহায়তা করা, আমার যা মনে হয় ওর (হাথুরুর) এই জিনিসগুলোতে কমতি রয়েছে।’