সৈকত মনি, এটিভি সংবাদ
সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাজাপ্রাপ্ত ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। এদের দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
গলফ নিউজের এক প্রতিবেদনেও এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট আমিরাতের বিভিন্ন জায়গায় গত মাসের বিক্ষোভে জড়িত বাংলাদেশি নাগরিকদের ক্ষমা করার আদেশ দিয়েছেন। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল তাদের সাজা বাস্তবায়ন বন্ধের আদেশও দিয়েছেন।
এছাড়া মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে এক বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেও এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আদালতে দোষী সাব্যস্ত ৫৭ জন বাংলাদেশিকে আজ দেশটির প্রেসিডেন্ট ক্ষমা করেছেন। শিগগিরই তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হবে।
এর আগে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে ৫৭ বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সে সময় আমিরাতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা আমিরাতি নিউজ এজেন্সি (ডব্লিউএএম) জানিয়েছে, এই ব্যক্তিদের কারাদণ্ড শেষ হলে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা বাংলাদেশের সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন সড়কে বড় ধরনের বিক্ষোভ আয়োজন করেছিল।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের বিক্ষোভ নিষিদ্ধ। গত ১৯ জুলাই, বাংলাদেশে আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি বিক্ষোভ করেন। এর পরদিন বাংলাদেশ দূতাবাস ও দুবাই কনস্যুলেট জেনারেল বিবৃতি দিয়ে প্রবাসীদের স্থানীয় আইন মেনে চলার আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্থানীয় আইন ও বিধিবিধান মেনে চলতে হবে। দেশের আইন অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া কোনো সভা-সমাবেশ, স্লোগান দেওয়া, গুজব বা অপপ্রচার চালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ ধরনের কাজ করলে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে, যার মধ্যে ভিসা বাতিল, জেল-জরিমানা, আমিরাত থেকে ফেরত পাঠানো বা ভবিষ্যতে প্রবেশ নিষিদ্ধ হওয়া অন্তর্ভুক্ত।
আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আমিরাতে ১০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি বসবাস করছেন, যারা শান্তিপ্রিয় ও পরিশ্রমী। কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত হলেও, তারা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন না। প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমিরাতকে তাদের দ্বিতীয় বাসস্থান মনে করেন এবং স্থানীয় আইন ও বিধিবিধানের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে— দেশটিতে পাকিস্তান ও ভারতের পর সবচেয়ে বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি বসবাস করেন।
Copyright © 2023 Atv Sangbad (A Concern of Aparadh Anusondhan Ltd) All rights reserved