নিজস্ব প্রতিবেদক, এটিভি সংবাদ
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হত্যার ষড়যন্ত্র করে খালেদা জিয়া ধারণা করেছিলেন আমি মারা যাব। কিন্তু আল্লাহ আমাকে বার বার বাঁচিয়েছেন। সোমবার (২১ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, দেশে আসার পর থেকেই আমার ওপর বার বার হামলা হয়েছে। কোটালিপাড়ায় সেই ৭৬ কেজি ও ৮৪ কেজি ওজনের বোমা পুতে রাখা হয়েছিল। হ্যাঁ, বেঁচে গেছি আমি বার বার। কেন বেঁচে গেছি, সেটা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জানেন- কেন বার বার তিনি মৃত্যুর হাত থেকে আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা বিরোধীদলীয় নেতাও হতে পারবেন না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, খালেদা জিয়া কীভাবে বলেছিলেন? হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল, আর ধারণা করেছিল, আমি মারা যাব। খালেদা জিয়া আরও বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ একশ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় দলের নেতাকর্মীদের মানবঢালে আমি বেঁচে গিয়েছিলাম। সেদিন লাশের ওপর লাশ পড়েছিল। সেদিন আমি আমার বাসার সবাইকে নামিয়ে দিই কোথায় কোথায় রোগী আছে, তাদের খুঁজে বের করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। তখন তো খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তখন কী ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি, সেটাই প্রশ্ন। সে কেন পুলিশকে বাধা দিল? সে কেন কোনো উদ্যোগ নিলো না হামলা থেকে রক্ষা করতে? এতে কী প্রমাণ হয়। এই গ্রেনেড হামলার সঙ্গে খালেদা জিয়া-তারেক রহমান গং যে জড়িত তদন্তেও সেটা বেরিয়েছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হলো। আমরা দুই বোন বিদেশে থাকায় বেঁচে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেদিন যে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান যে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। সেটি খুনি রশিদ ফারুকের বিবিসিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছিল। জিয়ার রহমান চেষ্টা করেছিল সবাইকে শেষ করে দিতে। উপসেনাপ্রধান হিসেবে তারও তো দায়িত্ব ছিল। কিন্তু সে তো তার সেই ভূমিকা রাখেনি। বরং বাংলার বেঈমান, খুনি মোনাফিক খন্দকার মোশতাক আহমেদ নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে সেই জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব দেয়। কী সখ্যতা ছিল তাদের! যেহেতু ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিল, সে কারণেই তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছিল।
এর আগে, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২১ আগস্টের নিহতদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। এরপর গ্রেনেড হামলায় আহতদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী সমাবেশে করছিল। ওই সময় আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভানেত্রী বেগম আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। এ ছাড়া দলটির পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও নিরাপত্তাকর্মী আহত হন।