atv sangbad

Blog Post

atv sangbad > অপরাধ-অনুসন্ধান > গুরুদাসপুরে প্রাণিসম্পদ খাতে তালিকা তৈরিতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ

গুরুদাসপুরে প্রাণিসম্পদ খাতে তালিকা তৈরিতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ

নাটোর প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ 

নাটোরের গুরুদাসপুর প্রাণিসম্পদ খাতে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের প্রণোদনা প্রদানে তালিকা তৈরিতে যথেষ্ট অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। করোনাকালীন সংকট মুহূর্তের জন্য প্রাণিসম্পদ ও দুগ্ধ উন্নয়ন প্রকল্পে (এলডিডিপি) গাভী খামারিদের প্রণোদনার জন্য এক হাজার ৬৬০ জনের অনুকূলে পৌনে দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

বরাদ্দের পুরো টাকাই অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দুই শতাধিক প্রকৃত গাভী খামারি বুধবার এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অফিসে অভিযোগ দিতে এলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন অফিসের লোকজন।

বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে মারধরের হুমকি দিয়ে অফিস থেকে তাদের জোর করে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগকারীরা জানান।

পরদিন তারা প্রাণিসম্পদ অফিসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে প্রণোদনার টাকা আত্মসাতের একটি লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর।

জানা যায়, যাচাই-বাছাই শেষে উপজেলায় এক হাজার ৬৬০ জন প্রকৃত গাভী খামারির তালিকা করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত ক্ষতিগ্রস্ত ওই এক হাজার ৬৬০ জন খামারির মাঝে এক কোটি ৭৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা প্রণোদনা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

গাভী পালনকারীদের প্রত্যেককে ১০ হাজার ১৬০ থেকে ২২ হাজার ৫০০ পর্যন্ত টাকা দেওয়া হয়েছে। লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডাররা প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করেন।

টুকটুকি রানী ও খাদিজা খাতুন নামে দু’জন লাইভস্টক ফিল্ড এসিসট্যান্ট তালিকা তদন্ত করেছেন। প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মানু ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সর্বশেষ তদন্ত করে ওই তালিকা হেডকোয়ার্টারে পাঠান।

সরেজমিন গেলে প্রকৃত খামারি উপজেলার পাটপাড়া গ্রামের অভিযোগকারী মহরম, হাসানসহ অন্তত ৩০ জন বলেন, যারা গাভী পালন করেন তারা প্রণোদনা পাননি। অথচ আদৌ গরু পালন করেন না এমন লোকদের কাছ থেকে অনৈতিক আর্থিক সুবিধা নিয়ে গোপনে তাদের তালিকা করে প্রণোদনার টাকা দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের কর্মচারী আ. লতিফ, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে কর্মরত পাটপাড়া গ্রামের খোয়াজের ছেলে ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে তারা দাবি করেন।

আ. লতিফ ও উপজেলা প্রকল্প অফিসে কর্মরত পাটপাড়া গ্রামের মোজাহারের ছেলে বাবলু গরু পালন না করলেও তিনি প্রণোদনার টাকা অনিয়মের মাধ্যমে উত্তোলন করেছেন।

এ ছাড়া উপজেলার সোনাবাজু গ্রামের শুকচানের ছেলে ধারাবারিষা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রাজিব হোসেন গরু পালন না করলেও প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন।

ওই গ্রামের শাকিল, আমিরুল, বাবু, পাটপাড়ার মামুন, মন্তাজ মিস্ত্রি, লাবলুর রহমান, পাঁচশিশার ময়েজউদ্দিন শাহর ছেলে জিয়ারুলসহ উপজেলার অন্তত ১০০টি বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে তারা গরু পালন না করলেও প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন।

গোপন সূত্রে জানা গেছে, পাটপাড়া ও সোনাবাজু গ্রামের খামারিদের অভিযোগ প্রত্যাহারের শর্তে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার করে টাকা দালাল চক্রের সদস্যরা দেবে মর্মে আপস মীমাংসা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মানু বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা, তবে ভুলত্রুটি থাকতে পারে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, এলএসপি তালিকা করেছেন। এক হাজার ৬৬০ জনের মধ্যে ১০ জনের বিষয়ে তদন্ত করেছিলাম। প্রকল্পের লোকজন অনিয়ম করে থাকলে তার দায়ভার তাদের।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) প্রধান করে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ব্রেকিং নিউজ :