নোয়াখালী প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় এক গৃহবধূকে অর্ধউলঙ্গ করে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ ও কোম্পানীগঞ্জের চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদে আটক রেখে চাঁদা দাবির ঘটনায় কবিরহাট থানায় ১২ জন চরিত্রহীনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গতকাল (৩ আগস্ট) ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে পর্নোগ্রাফি ও চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামিসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, আবু বক্কর ছিদ্দিক তানভির (৩৬) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউপি মেম্বার মোস্তাফিজের ভাই এবং হাজী সোলায়মানের ছেলে অপর আসামি ইকবাল হোসেন (২৬) সে একই গ্রামের তাজুল ইসলাম চেয়ারম্যানের ছেলে।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ২৬ জুলাই রাত ১০টার দিকে তিনি তার পরিবারের সকল সদস্যসহ রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর আসামি আবু বক্করের নেতৃত্বে রাজন (৪০) আলতাফ (৩০), ইকবাল (২৬) রুহুল আমিন (৪৫) ফারুক (৩৬) সহ অন্য আসামিরা ঘরের দরজা ধাক্কা দিয়ে ঘরে ঢুকে। ওই সময় আসামি আলতাফ ভুক্তভোগীর গায়ের কাপড় খুলে অর্ধউলঙ্গ করে এবং রাজন মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। অন্য আসামিরা আমার স্বামী কামালকে বেধড়ক মারধর করে দু’টি মোবাইল, নগদ ৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে আরও জানা যায়, সেখানে আমার দ্বিতীয় স্বামীর কাছে ২ লাখ চাঁদা দাবি করে। তিনি চাঁদা দিতে না পারায় তাকে চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আটক করে রাখে।
এ সময় আমি ভয়ে পালিয়ে যাই। তারপর আমার স্বামী কামালের কাছে নগদ টাকা না থাকায় বাছুরসহ একটি গাভী নিয়ে যায়। পরদিন সকালে আমার স্বামী বিবাহের কাবিন দেখালে চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয় এবং কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে। যদি কাউকে কিছু জানাই তাহলে আমার স্বামী সন্তানসহ আমাকে হত্যা করার হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ ঘটনার আমি কিছু জানি না। আমার পরিষদে কাউকে আটক করা হয়নি। কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বিষয়টি মানবজমিনকে নিশ্চিত করে বলেন, গত বুধবার ৩টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে কবিরহাট থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় এজাহার নামীয় আসামি ৭ জন এবং অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১০/১২ জন। ওসি আরও জানায়, চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদে গৃহবধূর স্বামীকে আটকে রেখে চাঁদা আদায় এবং দাবির বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের গতকাল সকালে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করতে বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।