সিলেট প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে দেশের সমৃদ্ধ চা শিল্প হুমকির মুখে পড়েছে। এতে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি চায়ের গুণগত মানেও বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে আলাদাভাবে চা ফ্যাক্টরিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব নয়। তাদের নিজস্ব জেনারেটরের নির্ভরতা বাড়াতে হবে।
বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের মাঝে ভরা মৌসুমে চা বাগানগুলোতে চা উৎপাদন চলছে। এমনিতেই অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি ও খরাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে টিকে থাকতে গিয়ে বাগান সংশ্লিষ্টরা হিমশিম খাচ্ছে। এর মধ্যে যোগ হয়েছে লোডশেডিং। এতে করে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি চায়ের গুণগতমান নিয়ে শঙ্কিত সিলেটের গুলনী চা বাগান ম্যানেজার কৃষিবিদ মু শাহাবুল্লাহ সরকার।
তিনি বলেন, ‘চা শিল্পের ইতিহাসে রেকর্ড উৎপাদনের এ সময়ে ঘন ঘন লোডশেডিং আগামী দিনেও চলতে থাকলে এ শিল্প মারাত্মক ক্ষতির মধ্যে পড়বে। এমনিতে চা উৎপাদনের ব্যয়ভার মেটাতে বাগানের মালিকদের কপালে ভাঁজ পড়ে যায়। তার ওপর উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটছে।
এ অবস্থায় সরকারের সহযোগিতা চাইলেন নর্থ সিলেট ভ্যালি বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান নোমান হায়দার চৌধুরী। তিনি বলেন, চা শিল্পকে বাঁচাতে হলে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। লোডশেডিংয়ের এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের চেষ্টা করতে হবে।
এদিকে, সরকার এরই মধ্যে চা বাগানগুলোর জন্য গ্যাসচালিত জেনারেটরের অনুমতি দিয়েছে। তা কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেট অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল কাদির।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের সাশ্রয়সহ নানা কারণে চাহিদার বিপরীতে ২০ থেকে ৩০ ভাগ লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে চা বাগানগুলোর জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব নয়। তাই প্রত্যেক বাগানকে নিজস্ব বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে।’
দেশ স্বাধীনের পর বার্ষিক চা উৎপাদন ছিল তিন কোটি ১০ লাখ কেজি। আর ২০২১ সালে চা উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টি হয়; যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি। ৫০ বছরে চা বাগানের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে বর্তমানে তা ১৬৭। আর উৎপাদন বেড়েছে তিনগুণ। ২০২৩ সালে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি।