কক্সবাজার থেকে মোজাম্মেল হক, এটিভি সংবাদ
ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ঘুষের ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকাসহ আটক কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি হুকুম দখল কার্যালয় (এলএ) শাখার সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের (৪০) বিরুদ্ধে গতকাল দুপুরে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলায় সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। কক্সবাজারের বিশেষ জজ আদালতে এ মামলা করেন দুদক কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন। একই সময় সার্ভেয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক থেকে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক, জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
দুদক সমন্বিত কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর বিভিন্ন ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ধারায় মামলাটি রুজু হয়েছে। সুবিধাজনক সময়ে সার্ভেয়ারকে রিমান্ডে নিয়ে জব্দ টাকার উৎস সম্পর্কে অনুসন্ধান করবে দুদক।
সার্ভেয়ার আতিকুরের বাড়ি সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীরপুর এলাকায়। তার বাবার নাম আবদুর রহমান। আতিকুরের চাকরি পার্বত্য বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কাযালয়ে হলেও তিনি (সার্ভেয়ার) সংযুক্তিতে দেড় বছর ধরে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসনের ভূমি হুকুম দখল (এলএ) শাখার অধীন মহেশখালী উপজেলার দায়িত্বে ছিলেন। মহেশখালীতে সরকারের মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনসহ প্রায় ১৫টি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন আতিকুরসহ তিন সার্ভেয়ার। ভূমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে জমির মালিকদের কাছ থেকে ঘুষ লেনদেনে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে আতিকুরের বিরুদ্ধে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১লা জুলাই সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে কক্সবাজার বিমানবন্দরের তল্লাশি গেট থেকে প্রবেশের সময় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সার্ভেয়ার আতিকের কাছে টাকা পাওয়া যাওয়ার বিষয়টি মুঠোফোনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজকে জানান।
তিনি (এডিসি) তাৎক্ষণিক আতিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। কিন্তু ততক্ষণে সার্ভেয়ার আতিক ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়ায় তাকে আটকাতে পারেনি কক্সবাজার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। পরে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক করা হয় তাকে। সেখানে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি টাকার উৎস সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। পরে গোয়েন্দা সংস্থা সার্ভেয়ার আতিককে কক্সবাজারে ফেরত এনে জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে। পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্ভেয়ার আতিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে সার্ভেয়ার আতিক টাকার উৎস সম্পর্কে সদুত্তর দিতে না পারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ১লা জুলাই রাতে সার্ভেয়ারকে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।