চট্রগ্রাম ব্যুরো, এটিভি সংবাদ 

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নে কবরস্থান কেটে খাল পুনঃখননের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। বড়হাতিয়া ইউনিয়নে সোনাইছড়ি খাল পুনঃখননকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে।

একপক্ষের দাবি- খালটি সরকারি শিট অনুযায়ী পুনঃখনন করার; কিন্তু বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার তা না মেনে এলাকার কবরস্থান ও রাস্তা কেটে খালটি পুনঃখননের চেষ্টা করছে। এতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করেছে এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেশি লাভবান হওয়ার জন্য সরকারি শিট অনুযায়ী খালটি পুনঃখনন করছে না।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ‘চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারের মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের’ আওতায় সোনাইছড়ি খালের ২ কিলোমিটার পুনঃখনন কাজের জন্য ২৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। খননের পর খালের প্রস্থ হবে ২৬ ফুট আর গভীরতা ১০ ফুট। কয়েক সপ্তাহ আগে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।

জেলা প্রশাসক বরাবরে দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার অন্তর্গত বড়হাতিয়া মৌজাস্থ ৬নং সিটের আর.এস. দাগ নং- ৭২৮৮, বিএস দাগ নং- ৩৫৭৯৬, ৩৫৭৫৩, ৩৫৭৯৭, ৩৫৭৯৮ এর আন্দর টিলা শ্রেণির জায়গাটি প্রায় ১০০ বৎসর পূর্বে হইতে অত্র এলাকার কবরস্থান হাজার হাজার মানুষকে এখানে সমাহিত করা হয়েছে।

স্থানীয় একটি চক্র নানা কৌশলে কবরস্থানের দিকে প্রবাহিত করে দেয়। এতে কবরস্থানের বিশাল জায়গায় খালে বিলীন হয়ে গেছে। এখন খালটি পুনঃখননের মাধ্যমে আবারো কবরস্থানের ওপর দিয়ে পুনঃখনন করলে কবর ও কবরস্থানের জায়গা খালে বিলীন হয়ে যাবে।

এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ৫ মে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করা হয়। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে সমাধান করে দিতে বললেও এ পর্যন্ত বড়হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিজয় কুমার বড়ুয়া কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে ও জানান এলাকাবাসী।

বড়হাতিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আহমদ কবির জানান, প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা একটি পক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের লেনদেন করে সরকারি শিট অনুযায়ী খালটি পুনঃখনন না করে কবরস্থানের ওপর দিয়ে করার চেষ্টা করছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এ কারণে আমরা ডিসি বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ইউনিটের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্রসেচ) মো. ইকবাল হোসেন জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে কাজ বন্ধ রেখেছি। সরেজমিনে তদন্ত করা হবে, কবরস্থান কেটে খালখনন করার সুযোগ কখনো দেওয়া হবে না।