তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ছড়িয়ে পড়ছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ। প্রতিষেধকের সংকট থাকায় আক্রান্ত গরুর মৃত্যুর হারও দ্রুত বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হয়ে উপজেলায় অন্তত ১৫ গরুর মৃত্যু ঘটেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৭ দিনে শুধুমাত্র উপজেলার তালম ইউনিয়নেই মৃত্যু ঘটেছে লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত ৭টি গরু। এগুলোর মধ্যে তালম ইউপির চাঁদপুর গ্রামের হাফিজুলের একটি, চৌড়া গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের একটি ও তাহাজ্জত হোসেনের দুইটি এবং তালমগ্রামের আল মাহমুদ, লাবু হোসেন ও কোবাদ হোসেনের একটি করে গরু মারা যায়। এসব গরুর মধ্যে অল্পবয়সী গরুর সংখ্যাই বেশি।
কৃষক ও খামারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক–দেড় মাসে উপজেলার শত শত গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিদিনই এ রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া উপজেলায় লাম্পি স্কিনের প্রতিষেধকের সংকটের কথাও জানান তাঁরা।
তাড়াশ প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. অলিউল ইসলাম বলেছেন, লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হয়ে উপজেলায় কতগুলো গরু মারা গেছে সে পরিসংখ্যান তাদের অফিসে নেই। তবে উপজেলার প্রায় সবগুলো গ্রামেই বর্তমানে লাম্পি স্কিন আক্রান্ত গরু রয়েছে বলে জানান তিনি। অলিউল ইসলাম জানান, লাম্পি স্কিন আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ রোগের প্রতিষেধক টিকা প্রদানের কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
উপজেলার পাড়িল গ্রামের কৃষক মো. আব্দুর রশিদ জানান, ল্যাম্পি স্কিনে আক্রান্ত গরুর শরীরে ছোট গোটা বের হয়। গরুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলে যায়। একইসঙ্গে আক্রান্ত গরুর শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, নাক–মুখ দিয়ে লালা ঝড়ে। গরুর খাবারের চাহিদা কমে যায়। কখনো কখনো দুই পায়ের মাঝে ও বুকে পানি জমে যায়। এভাবে এক সময় আক্রান্ত গরু নিস্তেজ হয়ে মারা যায়।
গবাদি পশুর কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গরুর ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাস জনিত রোগ। এ রোগ মূলত মশা, মাছির মাধ্যমে ছড়ায়। এ রোগে আক্রান্ত গরুর কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তাই গরুর আশপাশে মশা–মাছির উপদ্রব কমানো ও গোয়ালঘর ও গরু রাখার স্থান পরিস্কার–পরিচ্ছন্ন রাখার উপর গুরুত্ব দেন তাঁরা।
তাড়াশ প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. অলিউল ইসলাম বলেন, কৃষক ও গরুর খামারিদের লাম্পি স্কিন রোগ নিয়ে সচেতন করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন তাঁরা। লাম্পি স্কিন রোগ প্রতিরোধে গরু রাখার স্থান পরিস্কার–পরিচ্ছন্ন রাখা ও মশারি ব্যবহারের ওপর জোর দেন তিনি।
এটিভি/এস