প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪, ১:২৯ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ২৫, ২০২৪, ৯:১০ অপরাহ্ণ
জানা গেলো ফাহিম সালেহ হত্যার কারণ চার বছর পর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এটিভি সংবাদ :
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ২০২০ সালের ১৩ জুলাই নিজ অ্যাপার্টমেন্টে খুন হন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহ। নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় কয়েক মাস পরই তার ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস হ্যাসপিলকে গ্রেফতার করা হয় এবং বিচার শুরু হয়।
কিন্তু হ্যাসপিল ঠিক কি কারণে তার চাকরিদাতা ফাহিম সালেহকে নির্মমভাবে হত্যা করেন প্রায় চার বছর পর তার কারণ সামনে এসেছে। হ্যাসপিলের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, ফাহিম সালেহর হাজার হাজার ডলার চুরি করেছিলেন হ্যাসপিল। আর সেই চুরির ঘটনা লুকাতেই ফাহিমকে শিরোশ্ছেদ করে হত্যা করেন তিনি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন মতে, ফাহিমকে হত্যার কয়েক দিন আগেই চুরি করা অর্থ ব্যবহার করে নিজের ফরাসি বান্ধবী মেরিন চাভিউজকে উপহার দিয়েছিলেন হ্যাসপিল।
ফাহিম হত্যাকাণ্ডে দায়ের হওয়া মামলায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের একটি আদালতে ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর হ্যাসপিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্যদিয়ে বিচার শুরু হয়।
ম্যানহ্যাটান সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানিকালে হ্যাসপিলের আইনজীবী স্যাম রবার্ট বলেন, চুরির ঘটনা প্রকাশ পেতে পারে এবং সেটা জানার পর বান্ধবী তাকে ত্যাগ করতে পারে এমন ভয় থেকে হত্যার মতো অপরাধ ঘটান হ্যাসপিল।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ফাহিম সালেহ রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। বাংলাদেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রেও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
নিউইয়র্কে ফাহিমের কোম্পানি আর্থিক ও ব্যক্তিগত বিষয়গুলো দেখতেন হ্যাসপিল। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র মতে, ফাহিমের মোটা অঙ্কের অর্থ (৪ লাখ ডলার) সরিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।
বিষয়টি ধরা পড়ার পরও ফাহিম হ্যাসপিলের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেননি। বরং তাকে ওই অর্থ পরিশোধ করার সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু হ্যাসপিল এরপর পেপাল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ চুরি করছিলেন।
এবারও ধরা পড়েন হ্যাসপিল। আগের চুরির অর্থ যাতে দিতে না হয় এবং সম্ভাব্য আইনগত পদক্ষেপ এড়াতে ফাহিম সালেহকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সরকারি আইনজীবীরা ফাহিম হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত আদালতে উপস্থাপন করেছেন। তাদের দাবি, ফাহিমকে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনামাফিক খুন করেন হ্যাসপিল। তিনি প্রথমে মুখোশ পরে টেজার গান (এক ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্র) ব্যবহার করে ফাহিমকে অজ্ঞান করেন।
সেই টেজার গানের সূত্র ধরে হ্যাসপিলকে শনাক্ত করার কথা জানায় পুলিশ। হত্যার পর ফাহিমের শরীর খণ্ডবিখণ্ড করতে ইলেকট্রিক করাতসহ পরিচ্ছন্নতাসামগ্রী কিনেছিলেন হ্যাসপিল। এসব সামগ্রী কেনার ভিডিও ফুটেজও পাওয়া গেছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, হ্যাসপিলের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত খুন ছাড়াও অর্থসম্পদ লুট, চুরি, লাশ গুমের চেষ্টা ও আলামত নষ্টের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ওই হত্যাকাণ্ডের পেছনে হ্যাসপিলের মানসিক কষ্ট ও যন্ত্রণাকাতর ছোটবেলার কথা তুলে ধরেন আইনজীবীরা। দোষী সাব্যস্ত হলে হ্যাসপিলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। অবশ্য তার আইনজীবীদের আশা, কথিত মানসিক অবস্থা বিবেচনায় সাজা লঘু হতে পারে।
Copyright © 2023 Atv Sangbad (A Concern of Aparadh Anusondhan Ltd) All rights reserved