নিউজ ডেস্ক, এটিভি সংবাদ
শাম্মী সুলতানা সুখী। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। তার ইচ্ছা চিকিৎসক হওয়ার। নানা প্রতিকূলতা ও অভাব অনটনের মধ্যে এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারলেও অর্থাভাবে এখন কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার।
জানা গেছে, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রজিহার ইউনিয়নের রাংতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পায় শাম্মী। সে রাংতা গ্রামের সেলিম হাওলাদারের মেয়ে। সেলিম হাওলাদার ওই বিদ্যালয়েরই চতুর্থ শ্রেণির একজন কর্মচারী। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সংসার তার।
দুই সন্তানের মধ্যে ছেলে সিফাত হালদার বরিশাল পলিটেকনিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করেন। সিফাতের পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সেলিম হাওলাদারকে। এর মধ্যে সাম্মীর কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় ঘনিয়ে এসেছে। এমন অবস্থায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সাম্মীর পিতা সেলিম।
শাম্মী সুলতানা সুখী বলে, দরিদ্র বাবা-মার পক্ষে আমার লেখাপড়া চালানো সম্ভব ছিল না। এতদিন টিউশনি করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছি। আমার স্বপ্ন লেখাপড়া করে ভবিষ্যতে একজন ভালো চিকিৎসক হব। কিন্তু দারিদ্রতার কারণে মনে হয় আমার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন ভেস্তে যাবে।শাম্মীর বাবা সেলিম হাওলাদার বলেন, আমি শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। চারজনের সংসার সামান্য আয় দিয়ে চালিয়ে আসছি। এখন আর আমার পক্ষে ছেলে-মেয়েকে পড়াশোনা করানো সম্ভব নয়।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শাম্মীর মা রাশিদা বেগম বলেন, আমরা গরিব মানুষ। কীভাবে ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা করাব। আমাদের টাকা পয়সা নাই। ছেলেটা মানুষের সহযোগিতায় পড়ছে। মেয়ে শাম্মীর আশা সে ডাক্তার হবে। কিন্তু আমরা টাকার অভাবে তাকে কলেজে ভর্তি করাতে পারব না। এখন তার লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে হবে।
রাংতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, সেলিম হাওলাদার আমার বিদ্যালয়ে একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি। তিনি বর্তমানে হার্টের রোগে ভুগছেন। তার বড় ছেলে সিফাত হাওলাদার একজন মেধাবী ছাত্র। ২০২২ সালে এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ পায় সিফাত। আমাদের সহযোগিতায় তাকে বরিশাল পলিটেকনিক্যাল কলেজে সিভিল ইঞ্জিরিয়ারিংয়ে পড়ছে। শাম্মীও এ বছর এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। কিন্তু অর্থাভাবে তার কলেজে ভর্তি হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সূত্র/কেকে/এটিভি/১৮০৫২৪