সৈকত মনি, এটিভি সংবাদ
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে দল সমর্থিত একক প্রার্থীর পক্ষে সবার ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ না হওয়ার বিষয়েও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, দল থেকে যাকেই প্রার্থী করা হোক না কেন, তার বিরোধিতা করা যাবে না। গতকাল শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এসব বলেন।
বৈঠকে ৬১ জেলা পরিষদের মধ্যে ৬০টিতে দল সমর্থিত একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। শুধুমাত্র সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। এখানে প্রার্থিতা উন্মুক্ত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হওয়া ১১ জনের কাউকে এবার দলীয় প্রার্থী করা হয়নি। দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আওয়ামী লীগ আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, বিদ্রোহী কাউকে দলীয় মনোনয়ন কিংবা সমর্থন দেওয়া হবে না। আগামী ১৭ অক্টোবর ৬১ জেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এবার ৬১ জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যাশী ছিলেন ৫০০ নেতা। দলীয় সমর্থন বঞ্চিত হয়ে অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের একজন সদস্য জানান, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে বহিষ্কার করা হবে। এদিকে বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ (জাপা) অধিকাংশ রাজনৈতিক দল জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না।
৬০ জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন যারা
রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলায় আবু তোয়বুর রহমান, ঠাকুরগাঁওয়ে মু সাদেক কুরাইশী, দিনাজপুরে আজিজুল ইমাম চৌধুরী, নীলফামারীতে মমতাজুল হক, লালমনিরহাটে মতিয়ার রহমান, রংপুরে ইলিয়াস আহমেদ, কুড়িগ্রামে জাফর আলী এবং গাইবান্ধায় আবু বকর সিদ্দিককে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাটে খাজা সামছুল আলম, বগুড়ায় মকবুল হোসেন, নওগাঁয় একেএম ফজলে রাব্বি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে রুহুল আমিন, রাজশাহীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, নাটোরে সাজেদুর রহমান খাঁন, সিরাজগঞ্জে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ও পাবনায় আ স ম আব্দুর রহিম পাকনকে সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
খুলনা বিভাগের মেহেরপুরে মহা. আব্দুস সালাম, কুষ্টিয়ায় সদর উদ্দিন খান, চুয়াডাঙ্গায় মাহফুজুর রহমান (মনজু), যশোরে সাইফুজ্জামান পিকুল, মাগুরায় পংকজ কুমার কুন্ডু, নড়াইলে সুবাস চন্দ্র বোস, বাগেরহাটে শেখ কামরুজ্জামান টুকু, খুলনায় শেখ হারুনুর রশীদ এবং ঝিনাইদহে কনক কান্তি দাসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এই বিভাগের সাতক্ষীরায় কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
বরিশাল বিভাগের বরগুনায় জাহাঙ্গীর কবির, পটুয়াখালীতে খলিলুর রহমান, ভোলায় আব্দুল মুমিন টুলু, বরিশালে এ,কে,এম জাহাঙ্গীর, ঝালকাঠিতে খান সাইফুল্লাহ পনির এবং পিরোজপুরে সালমা রহমানকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইলে ফজলুর রহমান খান ফারুক, কিশোরগঞ্জে জিল্লুর রহমান, মানিকগঞ্জে গোলাম মহীউদ্দীন, মুন্সিগঞ্জে মো. মহিউদ্দিন, ঢাকায় মাহবুবুর রহমান, গাজীপুরে মোতাহার হোসেন, নরসিংদীতে আবদুল মতিন ভুঞা, নারায়ণগঞ্জে চন্দন শীল, রাজবাড়ীতে এ, কে, এম, শফিকুল মোরশেদ, ফরিদপুরে মোহাম্মদ ফারুক হোসেন, গোপালগঞ্জে মুন্সী মো. আতিয়ার রহমান, মাদারীপুরে মুনির চৌধুরী এবং শরীয়তপুরে ছাবেদুর রহমানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুরে মোহাম্মদ বাকী বিল্লাহ্, শেরপুরে চন্দন কুমার পাল, ময়মনসিংহে ইউসুফ খান পাঠান এবং নেত্রকোনায় অসিত কুমার সরকার মনোনয়ন পেয়েছেন।
সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জে খায়রুল কবির রুমেন, সিলেটে নাসির উদ্দিন খান, মৌলভীবাজারে মিছবাহুর রহমান এবং হবিগঞ্জে ডা. মো. মুশফিক হুসেন চৌধুরীকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আল মামুন সরকার, কুমিল্লায় মফিজুর রহমান বাবলু, চাঁদপুররে মো. ইউসুফ গাজী, ফেনীতে খায়রুল বশর মজুমদার, নোয়াখালীতে আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, লক্ষ্মীপুরে মো. শাহজাহান, চট্টগ্রামে এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম এবং কক্সাবাজারে মোস্তাক আহমদ চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
যৌথ সভায় সংসদীয় ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, কাজী জাফর উল্লাহ, রমেশ চন্দ্র সেন, ড. আবদুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, রশিদুল আলম, মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।