মুগদা হাসপাতালে শিশুদের জন্য নির্ধারিত ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি সব শিশুর অবস্থা এমন নয়। কেউ কেউ চেষ্টা করছে দুর্বল শরীর, পাংশু মুখেও প্রাণের উচ্ছ্বলতা দেখাতে। ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ঢুকতেই যেমন দেখা গেল স্যালাইন হাতে হেঁটে চলেছে এক কন্যাশিশু। ওর এক স্বজন ধরে রেখেছেন স্যালাইনের ব্যাগটি। নিজের পরিচয় দিয়ে শিশুটি বলল, তার নাম নাফিসা আক্তার। থাকে শনির আখড়ায়। তিন দিন হলো ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে। এখন যে ওর শরীর একটু ভালো সেটিও জানাল নিজে থেকেই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত প্রতি চারজনের একজন শিশু। চিকিৎসকেরাও বলছেন, ডেঙ্গুতে শিশুদের শরীরে বিভিন্ন জটিলতা বেশি দেখা যাচ্ছে।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. নিয়াতুজ্জামান বললেন, ‘এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোম বেশি। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, কাশি বেশি হচ্ছে শিশুদের। দ্রুত তাদের শরীরের অবস্থার পরিবর্তন ঘটে বলে ধারণা করাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তবে গত কয়েক দিন হলো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে।’
ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিশেষায়িত মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেল, মঙ্গলবার সেখানে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৭৫। গত এপ্রিল মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরুর পর এই হাসপাতালে একসঙ্গে ছয় শ রোগী ভর্তি থাকার রেকর্ডও আছে।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঠিক এক মাস আগে গত ১৪ জুলাই দেখা হয়েছিল ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি সাড়ে তিন বছরের মাসুমার সঙ্গে। এক হাতে ক্যানুলা আর অন্য হাতে সাদা ফুলের গোছা ধরে রেখেছিল। তার মা বলেছিলেন, হাসপাতালের নিচতলা থেকে ফুল ছিঁড়ে এনেছে সে।
মাসুমা এসেছিল রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে। ১৫ আগস্ট দুপুরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিশুদের নির্ধারিত ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল, মাসুমার সেই শয্যায় অন্য এক শিশু ভর্তি। জানা গেল, ফুল হাতে হাসপাতালে ঘুরে বেড়ানো মাসুমা বাড়ি ফিরেছে দীর্ঘদিন পর।
সূত্র : পিএ