লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররমনী এলাকার একটি ডোবা থেকে সামিয়া আক্তার (১০) ও তার ভাই তাজমুল হোসেনের (৭) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তফা কামাল। এর আগে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃত শিশু দুইটি সদর উপজেলার চররমনিমোহন ইউনিয়নের চর মেঘা এলাকার নব্যার চরে বসবাসকারী সুজন ঢালীর সন্তান।
জানা যায়, গতকাল বিকেলে ৩ সন্তানকে নিয়ে নৌকায় করে বাড়ির পাশের একটি দোকানে বাজার করতে যান কৃষক সুজন ঢালী। পরে বড় সন্তানকে তাঁর সঙ্গে রেখে সামিয়া ও তাজমুলকে বাড়িতে যাওয়ার জন্য নৌকায় উঠিয়ে দেন। এ সময় নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ডুবে যায় আশপাশের বিস্তীর্ণ চর এলাকা। কিছুক্ষণ পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে তাদের মরদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে রাত ২টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
স্থানীয়র জানান, নব্যার চরে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন কৃষক সুজন ঢালি। সম্প্রতি তার প্রতিবেশী আক্কাছ ব্যাপারী ও বিলকিছ গংদের সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলছে। এরই জেরে সুজন ঢালীকে নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল আক্কাছ ব্যাপারীসহ অন্যরা। জমি সংক্রান্ত বিরোধে শিশু দু’টিকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করছেন স্বজনেরা। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা।
শিশু দুইটির বাবা সুজন ঢালী অভিযোগ করে বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধে পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষ আক্কাছ ব্যাপারী ও বিলকিছ গংরা আমার দুই সন্তানকে হত্যা করে মরদেহ ডোবায় ফেলে দিয়েছে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।
এ বিষয়ে ওসি বলেন, শিশু সামিয়া আক্তার ও তার ছোট ভাই তাজমুল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কেউ তাদের হত্যা করেছে, নাকি নৌকা থেকে নদীতে পড়ে গিয়ে মারা গেছে তা এখনো জানা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ বলেন, ঘটনাটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।