মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সকালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন ও পদ্মা সেতুর রেলসংযোগ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন শেষে চাষাঢ়া রেলস্টেশনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী একথা জানান।
রেলমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর রেল লাইনের সাথে সমন্বয় করতে গিয়ে ডুয়েল গেজ লাইনের কাজে সময়ক্ষেপণ হয়েছে। তবে ডুয়েল গেজ সিঙ্গেল লাইনটি ডাবল লাইনে উন্নীত হচ্ছে। প্রকল্প দুটির কাজ দ্রুত শেষ করতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে নতুন-পুরাতন দুটি লাইনের প্রকল্পের কাজ একসঙ্গে এগিয়ে চলছে।
আগামী বছরের জুন মাসে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ডুয়েল গেজ ডাবল লাইনের কাজ শেষ করার ব্যাপারে রেলমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। এছাড়া ২৪ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর রেল লাইনের কাজটি শেষ করার পরিকল্পনার কথাও মন্ত্রী জানান।
তিনি বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ট্রেন নিয়ে কমলাপুর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রায়াল রান (পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল) শুরু করা হবে। পরে প্রধানমন্ত্রী সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।
একইসঙ্গে খুলনা থেকে মংলা পর্যন্ত এবং চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বড় একটি প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়ার কথা জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যে কাজটি শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ সময় রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন- পদ্মা সেতুর রেল লাইন প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েল গেজ লাইনের প্রকল্প পরিচালক সেলিম রউফসহ রেল মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পদ্মা সেতুর রেল লাইন প্রকল্পের পরিচালক জানান, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার লাইনের মধ্যে ৭৯ কিলোমিটার কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে বাকী ৩ কিলোমিটার রেল লাইন স্থাপন হয়ে গেলে ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত নতুন রেল লাইনের সাথে পুরাতন লাইন সরাসরি যুক্ত হবে। সেটি হয়ে গেলে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ট্রায়াল রান করার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে রেলপথের ছোট আকৃতির দ্রুত গতির বিশেষ যান গ্যাংকারে চড়ে রেলমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া রেল স্টেশনে এসে নামেন। এ সময় স্থানীয় সরকার উপ সচিব, চাষাঢ়া রেল স্টেশন মাষ্টার, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা মন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান। মন্ত্রী প্রায় পনের থেকে বিশ মিনিট চাষাঢ়া রেল স্টেশনে অবস্থান করেন। এ সময় সাংবাদিকদের ব্রিফিং দিয়ে পুনরায় গ্যাংকারে চড়ে ফিরে যান তিনি।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের উপর দিয়ে পদ্মা সেতুর রেল লাইন প্রকল্পের কাজের কারণে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে রেল মন্ত্রণালয়। তবে প্রায় আট মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন রেলপথের নিয়মিত যাত্রীরা। রেলমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১ আগস্ট ট্রেন চলাচল শুরু হলে ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবেন অন্তত ৩০ হাজার যাত্রী।