নিজস্ব প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১৪ দফা দাবি নিয়ে দিনাজপুর অভিমুখে রোড মার্চ শুরু করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। এর পরপরই রোড মার্চের যাত্রা শুরু করেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক। তিনি বলেন, আমরা মৎস্য ভবন পর্যন্ত পায়ে হেঁটে রোড মার্চ করে গাড়িতে উঠব।
গাজীপুরে আমাদের পরবর্তী সমাবেশ। এর পর থেকে আমাদের ধারাবাহিক কর্মসূচি আছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই রোড মার্চ সম্পন্ন করতে চাই। আমরা আশা করব, সরকার, সরকারি দল, প্রশাসন থেকে কোনো ধরনের সহিংসতা, কোনো ধরনের উসকানি দেওয়া হবে না।
তৃতীয় দিন মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বগুড়ার সাতমাথায়, বিকাল ৪টায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে, শেষদিন বুধবারে দিনাজপুরে সকাল ১১টায় ইনস্টিটিউট চত্বরে এবং বিকাল ৪টায় রংপুর টাউন হল প্রাঙ্গণে সমাবেশের মধ্য দিয়ে চার দিনের রোড মার্চ শেষ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে সাইফুল হক বলেন, গতকাল (৩ জুন) প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন তার এই বক্তব্যে রাগ-ক্ষোভ-অভিমানের একটা বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এত দিন ধরে সরকার বলে আসছিল, বিএনপিসহ বিরোধী দলের বিরুদ্ধে নাকি এই ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এটা পরিষ্কারভাবে বেরিয়ে এসেছে যে আজকে তারা (সরকার) যে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আরেকটা দখলদারি, আরেকটা তামাশার নির্বাচন, আরেকটা একতরফা নির্বাচন করতে যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এটা বুঝতে পেরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আগে থেকেই নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা, ভিসানীতি জারি করেছে। সরকারের থলের বিড়াল ইতিমধ্যে বেরিয়ে পড়েছে। এভাবে সরকার বাংলাদেশকে বিপদগ্রস্ত করছে। গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে তারা দেশ ও জনগণকে বাজি ধরছে। এই ধরনের দায়িত্বহীন ও গণবিরোধী সরকার জনগণ মেনে নিতে পারে না।
ভারতের নতুন সংসদ ভবনে ম্যুরালে যে অখণ্ড ভারতের মানচিত্র স্থাপন করা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এখনো বাংলাদেশ সরকারকে এর বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করতে দেখিনি। কোনো নিন্দা জানাতে দেখিনি। ভারতের এই তৎপরতা এই অঞ্চলের দেশগুলোর স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তার সরাসরি বিরুদ্ধে একটা উসকানি, অস্থিতিশীলতা, একটা সাম্প্রদায়িক বাতাবরণ তৈরি করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অনতিবিলম্বে ওই মানচিত্রের ছবি প্রত্যাহারের দাবি জানাই। পাশাপাশি অনতিবিলম্বে এই ম্যুরালে যে মানচিত্র দেওয়া হয়েছে তার প্রতিবাদ করে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারকে বক্তব্য দেওয়া দরকার।
জোনায়েদ সাকি বলেন, গতকাল আওয়ামী লীগের নেতাদের যুক্তিতর্ক প্রধানমন্ত্রী নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে আমেরিকা যাওয়ার দরকার নাই, আমেরিকা ছাড়া নকি পৃথিবীতে আরো দেশ আছে। এই বক্তব্যের মাধ্যমে কী বোঝা গেল? প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করে নিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন ভিসানীতি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের ন্যক্কারজনক ও কলঙ্কজনক যে নির্বাচন হয়েছে, সেই নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতেই তারা তা দিয়েছে। এটা খোদ প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করে নিলেন।
তিনি আরো বলেন, আজকে আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই ভিসানীতি বাংলাদেশের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেছে। এই সরকার সারা বিশ্বের কাছে আমাদের মাথা হেঁট করেছে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন করে। ২০২৩ সালেও নাকি তারা এই ধরনের নির্বাচন করতে যাচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্র এই ভিসানীতি দিল।