রাজশাহী প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ :
রাজশাহী নগরীর ডাসপুকুরের ডোমপাড়া এলাকায় প্রায় ২ বিঘা আয়তনের একটি পুকুর রয়েছে এলাকাবাসী পুকুরটিকে ডোমপাড়া পুকুর হিসেবে চেনেন। বাপ-দাদার আমল থেকেই মাছ চাষ এবং এই পুকুরটির পানি নানা কাজে ব্যবহার করে আসছিলেন স্থানীয়রা। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর দায়িত্ব নিয়ে দিনের আলোতে অভিনব কায়দায় পুকুরটি ভরা শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠে এসেছে এলাকাবাসীর।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে পুকুরে মাছ চাষ থেকে শুরু করে ডোমপাড়া বাসিন্দারা এখনো অনেকেই এই পুকুরের পানিতে গোসলসহ নানান কাজ করে থাকেন। কিন্তু সম্প্রতি হঠাৎ করে কয়েকদিন যাবৎ এলাকাবাসী লক্ষ্য করেন পুকুরের পার ঘেঁষে ময়লা, রাবিশ ফেলে প্রায় এক তৃতীয়াংশ পুকুর ভরাট করে ফেলেছে একটি প্রভাবশালী চক্র।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে এই পুকুর দেখে আসছি। এখন পুকুরের মধ্যে দেখি ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকুর লোকেরা ভ্যানে ময়লা ফেলে পুকুর ভরাট করছে। এর আগে রাজশাহীর সিটি কর্পোরেশনের অন্যান্য কাউন্সিলর গুলি পুকুর ভরাটের দায়িত্ব নিয়েছে কিন্তু সেগুলো রাতের আঁধারে পুকুরটিকে ভরাট করে বাসস্থান বানানোর জন্য আদালতের নিদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অমান্য করে কাজগুলি সম্পন্ন করেছে। তবু তাদের কোন শাস্তি মেলেনি প্রশাসনের কাছ থেকে।
সরেজমিনে আরো অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজশাহী নগরীতে এভাবেই দিনে দুপুরে পুকুর পারে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকুর ভ্যানম্যান ভ্যানে করে ময়লা, রাসিক ফেলছেন। জানতে চাইলে সেই ভ্যানম্যান বলেন সব ভ্যানম্যান ফেলে তাই আমিও ফেলি। আর ময়লা আবর্জনা সিটি কর্পোরেশন বা কাউন্সিলরের অনুমতি ছাড়া কেউ ফেলতে পারে নাকি। সিটি কর্পোরেশন বা কাউন্সিলর যখন যেখানে ময়লা জমাতে বলে আমরা সেখানেই মহিলা জমাই রাস্তার পাশে রাখলে সেগুলো রাতের আঁধারে সিটি কর্পানে গাড়ি বেনে করে নিয়ে চলে যায়। এভাবেই ময়লা, রাবিস ফেলে অভিনব পদ্ধতিতে ধীরে ধীরে ভরাট করা হচ্ছে নগরীর আইডির ডোমপাড়ার পঁচা পুকুর।
ওইসব পুকুরগুলো ভরাট করে রাতারাতি সেখানে গড়ে উঠছে ভবন। অথচ উচ্চ আদালতের কড়া নির্দেশনা রয়েছে রাজশাহী নগরীতে কোনোভাবেই পুকুর-জলাশয় ভরাট করা যাবে না। কিন্তু সেই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একের পর এক পুকুর ভরাট চলছেই নগরীতে। এর পেছনে বড় ভূমিকা রাখছেন স্থানীয় কাউন্সিলররা। এভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন ওই কাউন্সিলররা। এসব নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিচ্ছে। একজন জনপ্রতিনিধির এলাকায় আদালতের আদেশ অমান্য করছে সে বিষয়ে তার কোন কিছু করার নাই। কোন কোন কাউন্সিলর বলেন আমি তাদের বলে দিচ্ছি নয়তো থানার লোককে দিয়ে ব্যবস্থা নেব পরবর্তীতে আপডেট জানতে চাইলে বলে দেখছি একটু ব্যস্ত ছিলাম খুব তাড়াতাড়ি সেটা ঠিক হবে এইভাবে করতে করতে পুকুর হত্যা করা সম্পূর্ণ হয়ে যায়।
জানতে চাইলে পুকুর মালিক রোমান বলেন, পুকুর ভরাট করে আমরা দোকানঘর নির্মাণ করবো আর এ বিষয়ে ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকু ভাইকে জানিয়ে আমরা কাজ করছি। কিন্তু জমির মালিকের বলা ও এলাকাবাসীর বলা কথা প্রতিটাই কাউন্সিলর সাহেব জানা নাই বলে এড়িয়ে যাই।
জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জানান,এ বিষয়টা আমার অবগত ছিলোনা আমরা তদন্ত করে বিষয়টা দেখবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজপাড়া থানার (ওসি) বলেন, আমি একটু ব্যাস্ত আছি এবিষয়ে পরে কথা বলছি।
এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ০৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকু এলাকাবাসির অভিযোগ অস্বিকার করে তিনি জানান, পুকুর ভরাটের বিষয়টা আমার জানা নাই তবে আমি আমার ভ্যানম্যানদের ওখানে ময়লা ফেলতে বলেছিলাম এখন যেহেতু পুকুর ভরাট হচ্ছে সেহেতু আমার আর কোন লোক সেখানে ময়লা ফেলবেনা।