প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪, ১:২৪ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ৩১, ২০২৪, ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ
দিশেহারা গ্রাহক ভূতুড়ে বিলে,অভিযোগেও নেই প্রতিকার
নিউজ ডেস্ক, এটিভি সংবাদ :
পল্লী বিদ্যুতের ভূতুড়ে বিলে অতিষ্ঠ মাদারীপুরের ডাসার উপজেলাবাসী। এক মাসের ব্যবধানে তিন থেকে চারগুণ বেশি বিল হওয়ায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। অভিযোগ জানিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। অতিরিক্ত নয়, ব্যবহার বাড়ায় বিল বেশি হচ্ছে বলে দাবি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তাদের।
ভ্যানচালক রাজ্জাক কাজী। দক্ষিণ খিলগ্রামের বাসিন্দা। প্রতিদিন আয় করেন ৭০০-৯০০ টাকা। এ আয়ের ওপর চলে সংসার। গত এপ্রিল মাসে ১ হাজার ১২৫ টাকা বিদ্যুৎ বিল এলেও মে মাসে সেই বিল এসে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৬৯ টাকায়। অভিযোগ জানাতে হাজির হন মাদারীপুরের ডাসার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে।
শুধু রাজ্জাক কাজীই নয়। এমন ভূতুড়ে বিলের শিকার উপজেলার অধিকাংশ গ্রাহক। গত মাসের বিল থেকে এক লাফে তিন থেকে চারগুণ বেশি বিল আসায় অসহায় ব্যবহারকারীরা।
জানা গেছে, ৫টি ইউনিয়নের ২৮টি গ্রামের ১৬ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলের জন্য মিটার রিডার রয়েছেন মাত্র ৭ জন। অভিযোগ আছে, অফিসে বসেই বিদ্যুৎ বিল তৈরি করছেন মিটার রিডাররা। একমাসের বিদ্যুৎবিল বকেয়া হলে গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। নতুন করে সংযোগ নিতে গ্রাহককে গুণতে হচ্ছে বাড়তি সাড়ে ৮০০ টাকা। ভূতুড়ে বিল নিয়ে একাধিকবার অভিযোগ দিয়ে প্রতিকার না পাওয়ায় অফিস ঘেরাও করেন গ্রাহকরা। কর্মকর্তাদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তর্কবিতর্কে।
ভুক্তভোগী ভ্যানচালক রাজ্জাক কাজী বলেন, ‘গত মাসে আয় কম ছিল তাই বিদ্যুৎ বিল দিতে পারি নাই। এ মাসে ভাবছিলাম দুইমাসের বিল একসঙ্গে দিব। কিন্তু গত মাসের থেকে ৪ গুন বিল বেশি আসছে। আমি গরীব মানুষ, এতো বিল কিভাবে এখন দিবো?’
পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামের বায়েজিত হাওলাদার বলেন, ‘পুরো ইউনিয়নের মানুষের একই সমস্যা। হঠাৎ একসঙ্গে এমন ভূতুড়ে বিল আসায় সবার কষ্ট হচ্ছে। অফিসের লোকজন ইচ্ছেমতো বিল করছে, যার প্রভাব পড়ছে গ্রাহকের ওপর।’
আব্দুল আজিজ হাওলাদার নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমরা অসহায় মানুষ, এতো বেশি বিল আমরা এখন কিভাবে পরিশোধ করবো, বিল না দিলে পরের মাসে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তারা। এই ভূতুড়ে বিল নিয়ে বিপাকে পড়েছি।’
দক্ষিণ খিলগ্রামের আব্দুল হক মোল্লার স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘৩০৬ টাকা থেকে এক লাফে এক হাজার টাকার ওপরে আসছে। এতো বিল দিতে হিমশিম খাচ্ছি। অভিযোগ জানিয়েও কোনো ফল পাচ্ছি না।’
মাদারীপুরের ডাসার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে চাহিদার তুলনায় ব্যবহার বাড়ায় বিদ্যুৎবিল বেশি আসছে। কোনো ভূতুড়ে বিল হচ্ছে না। মিটার রিডাররা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মিটার দেখেই বিল করছে। গ্রাহকরা বেশি বেশি ব্যবহার করছে, তাই গতমাসের তুলনায় এ মাসে বিল একটু বেশি হচ্ছে।’
বিদ্যুৎ অফিস সূত্র জানায়, ২০০৩ সালের আগস্ট মাস থেকে শুরু হয় ডাসার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কার্যক্রম। ২৭৩ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইনের প্রতিদিন চাহিদার সাড়ে তিন মেগাওয়াট বিদ্যুতের পাওয়া যাচ্ছে সবটুকুই।
Copyright © 2023 Atv Sangbad (A Concern of Aparadh Anusondhan Ltd) All rights reserved