নিউজ ডেস্ক, এটিভি সংবাদ :
ত্রিশ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে দুই দিনে একশ কোটি টাকা পাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। সম্প্রতি এই চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
২ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ৬০ ফুট আগারগাঁও এলাকায় পিবিআই (ঢাকা মেট্রো-উত্তর ) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, আসামি কাজী মো.ইউছুফ কয়েন কেলেঙ্কারির মাধ্যমে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার মামলায় জড়িত ফেনী সদর থানাধীন খেজুরিয়ার একটি ভাড়া বাসা থেকে ইউসুফকে (৪৬) গ্রেফতার করা হয়। পরে তিনি আরও জানান, অপর সহযোগী আসামি মানিক মোল্লাকে (৬৬) তার ৩নং ওয়ার্ডের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় ২৯ এপ্রিল সকাল পৌনে ৯টার দিকে চাঁদপুরের ৭ নং চর বাকিলার থেকে।
পুলিশের বিশেষ সুপার জানান,এ মামলার অভিযোগকারী রফিকুল ইসলাম ও আসামি কাজী মো. ইউছুফ পূর্বপরিচিত ।বাদী রফিকুলকে প্রস্তাব দেন, ৩০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করলে দুই দিনে ১০০ কোটি টাকা আয় করা যাবে। এরপর আসামি মো. ইউছুফ রফিকুল ইসলামকে হযরত শাহ জালাল (রহঃ) ও হযরত শাহ পরান (রহঃ) এর মাজারে নিয়ে যান এবং তাকে এ বিষয়ে কাউকে না বলার শপথ করান।
পরে অন্য আসামিরা বিভিন্ন স্থানে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে। একপর্যায়ে বাদীকে চাঁদপুরের মানিক মোল্লার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় মুদ্রাগুলো দেখাতে।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন পরে অন্য আসামিরা রফিকুল ইসলামকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মিটিং করেন। একপর্যায়ে কয়েন দেখানোর জন্য বাদীকে চাঁদপুরে মানিক মোল্লার বাসায় নিয়ে যান।
বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, সেখানে কয়েকজন মিলে বাদীকে একটি কয়েন বৈদ্যুতিক আলোতে পরীক্ষা করে দেখান। বাদী কয়েন দেখার পর ঢাকায় চলে আসেন। পরে কয়েকজনের উপস্থিতিতে বাদী প্রথমে নগদ ১০ লাখ টাকা মো. মানিককে দেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কয়েনের মালিকানা নিয়ে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি করেন বাদী ও আসামিরা। একপর্যায়ে কাজী মো. ইউছুফ, মো. মানিক মোল্লা ও গোলাম মাওলা বাদী মো. রফিকুল ইসলামকে জানান যে কয়েনটি ঢাকার ডিপ্লোমেটিক জোনে ওঠাতে হবে। এ জন্য তারা বাদীর কাছে আরও ৫ কোটি টাকা দাবি করেন। তখন বাদী ও আসামিদের মধ্যে দর কষাকষি হয়।
তিনি বলেন, এক সময় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা সিদ্ধান্ত হয়। বাদী কিস্তিতে ৪৯ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন।
বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন: এরপর বিভিন্ন অজুহাতে আসামী বাদীর কাছ থেকে আরও ২ কোটি ২৩ লাখ নিয়ে নেয়।
অভিযোগকারী বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি প্রতারিত হয়েছে। পরে রফিকুল ইসলাম গত ২৫ মার্চ ঢাকা বিমানবন্দর থানায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর বিমানবন্দর পুলিশ কর্মকর্তারা মামলাটি পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)-এর কাছে হস্তান্তর করেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুইজনকে আটক করেছে পিবিআই। এরপর তারা দশদিনের রিমান্ডের আদেশের আবেদন করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ মঞ্জুর করেন।রিমান্ডে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে।
তিনি বলেন, কয়েন চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।