আহসান হাবীব, এটিভি সংবাদ
সীমান্ত সংলগ্ন ৩২ জেলা দিয়ে দেশে ঢুকছে ভয়ংকর সব মাদক। আন্ডারগ্রাউন্ডে লুকিয়ে থেকেই সারাদেশে মাদকের জাল বিস্তার করছে মাস্টারমাইন্ডরা। ছদ্মবেশে থাকা শত শত কুরিয়ার ব্যবহার হচ্ছে। বেপরোয়া মাদক কারবারিদের হাতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও নিরাপদ নয়! মাদক কারবারীদের হাতে নিহত সোর্স সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে ৭ জনকে গ্রেফতারের পর সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য দিয়েছে র্যাব।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আন্ডারগ্রাউন্ডে লুকিয়ে থেকেই মাদকের মাস্টারমাইন্ডরা তাদের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। সরবরাহে ব্যবহার হচ্ছে ছদ্মবেশে থাকা শত শত কুরিয়ার।
খন্দকার আল মঈন জানান, মাদকের পাশাপাশি আইনৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোর্স ও মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের হত্যা, নির্যাতন করছে মাদক কারবারীরা। যার সবশেষ নজির কেরানীগঞ্জের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামের নৃশংস হত্যাকাণ্ড।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে এসব কারবার করা হয়, তাই তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা সব সময় পাওয়া যায় না। যাদেরকে মাদকসহ ধরা যায়, তাদের ক্ষেত্রে আইনানুগ প্রক্রিয়াটা যতটুকু করা সম্ভব হয়, কিন্তু পেছনে থেকে যারা এ কাজ করে, তাদেরকে ধরাটা কঠিন হয়ে যায়।’
গত রোববার (৩০ জুলাই) ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে সাইফুল ইসলাম নামে এক কাপড় ব্যবসায়ীকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে যখম করা হয়। পরে তারা পাশের দোকান থেকে চামচ এনে ভুক্তভোগীর দুটি চোখ উপড়ে ফেলে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। যার পরিকল্পনায় এ হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়, রাজন ও তার অন্যতম সহযোগী জানে আলম ও সুমনসহ ৭ জনকেই আমরা আটক করতে সক্ষম হয়েছি।
আইস, ইয়াবা, হেরোইন, প্যাথেডিন, বুপ্রেনরফিনসহ ২৪ ধরনের মাদক দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহনী। তবুও দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মাদকের লাগাম কিছুতেই টেনে ধরা যাচ্ছে না।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তথ্য বলছে, আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের রুট ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল’ এবং ‘গোল্ডেন ক্রিসেন্ট’- এর একেবারে কেন্দ্রে বাংলাদেশ। প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমার থেকে ভয়ংকর সব মাদকের অনুপ্রবেশ ঘটছে বাংলাদেশে। প্রবেশপথ হিসেবে দেশের সীমান্ত সংলগ্ন ৩২টি জেলাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিতও করেছে সংস্থাটি।
এ ধরণের অপরাধে যারা সংশ্লিষ্ট থাকেন, তারা অনেক ক্ষেত্রেই খুব বেপরোয়া হয়। মাদকবিরোধী অভিযানে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যও নিহত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, মাদকের বিরুদ্ধে অর্থাৎ মাদক সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়েও আমাদের অনেক সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।
মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করা হবে বলেও জানায় র্যাব।