atv sangbad

Blog Post

দেশ যাচ্ছে বিপদের দিকে

সৈকত মনি, এটিভি সংবাদ 

১০ ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে গত বুধবার (৭ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে পুলিশ-বিএনপির সংঘাতে হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোট। এসব দল-জোটের কেউ পৃথক বিবৃতিতে, কেউ সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, চলমান পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ উৎকণ্ঠায়, দেশ যাচ্ছে বিপদের দিকে।

মানুষ হতবাক : ২০ দলের নেতারা

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা গতকাল বৃহস্পতিবার এক যুক্ত বিবৃতিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। জোট নেতারা বলেছেন, পুলিশি অভিযান, লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল নিক্ষেপ এবং গুলি চালানোর ঘটনায় দেশবাসী হতবাক। চার শতাধিক নেতাকর্মীকে দলীয় কার্যালয়ের ভেতর থেকে  টেনে-হিঁচড়ে বের করে ধরে নিয়ে যাওয়া কোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশে ঘটতে পারে না।

২০ দল নেতারা বলেন, যে সরকার বিরোধী দলের একটি সাধারণ সমাবেশ মেনে নিতে পারে না, সেই সরকারকে ক্ষমতায় রেখে কীভাবে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব! সরকারের অসহিষ্ণু মনোভাব ও আক্রমণাত্মক আচরণই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের যৌক্তিকতা প্রমাণ করে। তারা অবিলম্বে বিএনপির সকল নেতাকর্মীকে মুক্তি এবং ১০ তারিখ নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার দাবি জানান। বিবৃতিদাতা ২০ দলের নেতারা হলেন—মোস্তফা জামাল হায়দার, সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, খন্দকার লুত্ফুর রহমান, শাহাদাত হোসেন সেলিম, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি প্রমুখ।

ছবি: আব্দুল গনি

আগুন নিয়ে খেলা বন্ধ করুন, নয়তো পরিস্থিতি কারো নিয়ন্ত্রণে থাকবে না : কর্নেল অলি

২০ দল শরিক এলডিপি সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশে এখন একাত্তরের মার্চের মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগুন নিয়ে খেলা বন্ধ করুন, নয়তো পরিস্থিতি কারো নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। তবে আজকের খেলা-খেলা ভাব কয়েক দিনের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

নাগরিক অধিকারের কফিনে পেরেক ঠুকবেন না : চরমোনাই পীর

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (আইএবি)-এর আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীরসাহেব চরমোনাই গত বুধবার (৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেছেন, বহুদলীয় রাজনীতি এবং ক্ষমতাসীন দলের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মিছিল-সমাবেশ করা, এমনকি ক্ষমতা পরিবর্তনের চেষ্টা করা বাংলাদেশের সংবিধানমতেই বিধিসিদ্ধ। সমাবেশে নিরাপত্তা  দেওয়া, সমাবেশে উপস্থিত জনতার যাতায়াত সহজ করা সভ্য রাষ্ট্রের সরকারের মৌলিক দায়িত্বের অংশ। কিন্তু বর্তমান সরকার মৌলিক অধিকারসমূহকে নির্মমভাবে হরণ করেই যাচ্ছে। তারা বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশগুলোতে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিরোধীদলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে একটি উত্তেজনাপূর্ণ সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। নাগরিক অধিকারের কফিনে পেরেক না ঠুকতে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সরকার ভয়াবহ উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে : মাহমুদুর রহমান মান্না 

গতকাল ঢাকায় ‘গণতন্ত্র মঞ্চের’ সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে সরকার নৃশংসতার সব সীমা অতিক্রম করেছে। বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে তাদের উপর নৃশংস হামলা চালিয়ে সরকার ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় নাগরির ঐক্যের অফিসের পাশে একটি মিলনায়তনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের প্রতি সমর্থন জানায় গণতন্ত্র মঞ্চ। সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক খেলা হবে বলে আগ্রাসি ও আক্রমণাত্মক রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছেন, বুধবারের ঘটনা সেই খেলারই অংশ।

তিনি বলেন, বিএনপির অফিসে যেভাবে হামলা করা হয়েছে, সেটি আওয়ামী লীগের জন্য একটা কলঙ্কের তিলক হয়ে থাকবে। সরকার নিজেই দেশটাকে বিপদের মধ্যে ফেলে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বিএনপি এবং গণতন্ত্র মঞ্চ সামনে যুগপৎভাবে লড়াই শুরু করতে পারবে বলে আশা করছি। বাংলাদেশের মানুষ ’৬৯ এবং ’৭১ তৈরি করেছে। আগামীদিনেও ঐক্যবদ্ধভাবে লড়বে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ব্রেকিং নিউজ :