প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪, ৩:২৩ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ৩১, ২০২৪, ৮:৩৬ অপরাহ্ণ
দোষী সাব্যস্ত ঘুষের মামলায় ট্রাম্প কি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এটিভি সংবাদ :
পর্ন তারকাকে ঘুষ দেয়ার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগের সব কটিতেই দোষী প্রমাণিত হয়েছেন রিপাবলিকান এই নেতা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফৌজদারি মামলায় সাজার মুখোমুখি হয়েছেন ট্রাম্প। প্রশ্ন উঠছে, ৭৭ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী? তিনি কি আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন বা কিংবা প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন?
তথ্য গোপনের উদ্দেশ্যে ব্যবসায়িক নথিপত্রে জালিয়াতি করার দায়ে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করেছে নিউইয়র্ক আদালতের ১১ সদস্যের জুরি বোর্ড। আগামী ১১ জুলাই ট্রাম্পের সাজা ঘোষণা করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, ট্রাম্পের জেল বা জরিমানা অথবা একসঙ্গে দু’টি সাজাই হতে পারে। যে মামলায় তাকে ‘অপরাধী’ ঘোষণা করা হয়েছে, মার্কিন আইন অনুযায়ী তাতে সর্বোচ্চ সাজার মেয়াদ চার বছরের জেল।
নিউইয়র্ক আদালতের জুরি বোর্ডের সভাপতিত্বকারী বিচারক জুয়ান মার্চান। ‘অপরাধীদের কঠোর সাজা’ দেয়ার জন্য তার পরিচিতি রয়েছে। তবে আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এক্ষেত্রে ৭৭ বছরের রিপাবলিকান নেতাকে শুধু জরিমানা দিয়েই ছাড় দিতে পারেন আদালত।
কারণ, প্রথমত তার বয়স। দ্বিতীয়ত, অপরাধের ধরন ‘অহিংস’ এবং তৃতীয়ত, এটাই তার প্রথম অপরাধ। তাছাড়া দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়ায় ট্রাম্পের প্রতি জুরি ‘বাড়তি সহানুভূতি’ দেখাতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
আগামী ১১ জুলাই শাস্তি ঘোষণার আগে ট্রাম্প আদালতে তার ‘চরিত্রের’ বিষয়ে পরিবার এবং পরিচিতদের শংসাপত্র পেশের সুযোগও পাবেন। মার্কিন আইনে এমন শংসাপত্রে শাস্তি লাঘব হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
কারাদণ্ডে সাজা হলেও এখনই তা কার্যকর না-ও হতে পারে। মার্কিন আইন অনুযায়ী, এক্ষেত্রে ম্যানহাটনের রাষ্ট্রীয় আপিল আদালতে আবেদন জানিয়ে স্থগিতাদেশ পেতে পারেন ট্রাম্প। রায় ঘোষণার পরই বৃহস্পতিবার ট্রাম্প উচ্চতর আদালতে আবেদনের বার্তাও দিয়ে রেখেছেন।
ট্রাম্পের আবেদন সম্পর্কে রায় জানাতে আপিল আদালতের এক বছরেরও বেশি সময় লাগতে পারে বলে আইনজীবীদের একাংশের মত। ততদিনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে যাবে।
তবে শেষ পর্যন্ত জেলে যেতে হলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে বাধা থাকবে না ট্রাম্পের। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ফৌজদারি মামলার আসামিও দেশের সর্বোচ্চ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার উপযুক্ত।
তবে সাজাপ্রাপ্ত নেতা যদি নির্বাচিত হন, তবে ভোটের পরে কংগ্রেসের দুই কক্ষে তাকে ইমপিচমেন্ট তথা অভিশংসন করার প্রক্রিয়া শুরু করা হতে পারে।
ঘটনাচক্রে ট্রাম্পের সাজা ঘোষণার কয়েক দিন পরই রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলন। ওই সম্মেলনেই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার কথা রয়েছে। তবে রিপাবলিকান নেতৃত্ব সর্বসম্মতভাবে প্রার্থীপদের বিরোধিতা করে প্রস্তাব নিলে সমস্যা বাড়তে পারে ট্রাম্পের।
গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে ‘অবৈধ সম্পর্কে’ জড়িয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বিষয়টি যাতে সামনে না আসে সেজন্য ড্যানিয়েলসের মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্প তাকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
টাকা দেয়ার বিষয়টি গোপন রাখতে ট্রাম্প তার ব্যবসায়িক সংস্থার নথিপত্রেও জালিয়াতি করেছিলেন। যদিও শুরু থেকেই ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
সে সময় ম্যানহাটন ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগ অভিযোগের তদন্ত করেছিলেন। তিনি ডেমোক্র্যাট দলের সদস্য। ফলে ‘রাজনৈতিক চক্রান্তের’ অভিযোগ তোলে ট্রাম্প শিবির।
চলতি বছরের নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ইতোমধ্যেই ‘রিপাবলিকান ককাস’-এ প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ট্রাম্প।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে আইন-বহির্ভূতভাবে গোপন সরকারি নথিপত্র নিজের হেফাজতে রাখা, ক্যাপিটল দাঙ্গাসহ তিনটি ফৌজদারি মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন।
Copyright © 2023 Atv Sangbad (A Concern of Aparadh Anusondhan Ltd) All rights reserved
প্রিন্ট করুন
সেভ করুন