সরকার দল-মত-নির্বিশেষে সবার জন্য উন্নয়ন করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঘর দিয়েছি। কে আওয়ামী লীগ, কে বিএনপি তা দেখিনি। কে ভূমিহীন সেটা দেখেছি। আমরা সেভাবেই উন্নয়ন করতে চাই।’
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব পেলেন
সভায় পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কানাই লাল বিশ্বাস আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব চান। এ সময়ে তাঁকে পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেন শেখ হাসিনা। এরপর আরো একাধিক জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতিও পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব চান। শেখ হাসিনা তখন সব জেলা, উপজেলা মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যাঁরা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আছেন, তাঁদের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেওয়ার ঘোষণা দেন।
জনপ্রিয় ব্যক্তি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি
সভায় উপস্থিত সূত্র জানায়, তৃণমূলের একাধিক নেতা বক্তব্যে ত্যাগী, জনপ্রিয় ব্যক্তি ও দুর্দিনের ছাত্রলীগ নেতাদের মনোনয়ন দেওয়ার অনুরোধ জানান। হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী বলেন, আগামী নির্বাচনে ছাত্রলীগ থেকে উঠে আসা নেতাদের মনোনয়ন দেওয়ার পাশাপাশি দলের কাজে লাগানো দরকার। জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার দাস আগামী দিনে প্রার্থী চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে জনপ্রিয়দের অগ্রাধিকার দেওয়ার অনুরোধ জানান। নির্বাচনের আগেই জেলার সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর সম্মেলন দেওয়ার অনুরোধ জানান।
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, সব ভেদাভেদ ও কোন্দল দূর করে আগামী জাতীয় নির্বাচনেও জেলার ছয়টি আসনেই নৌকার বিজয় উপহার দেওয়া হবে। তিনি জরিপের ভিত্তিতে জনপ্রিয়দের মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান।
এমপির ওপর ক্ষোভ তৃণমূলের নেতাদের
একাধিক সূত্র জানায়, সভায় কয়েকজন নেতা তাঁদের বক্তব্যে সংসদ সদস্যদের ভূমিকার সমালোচনা করেন।
পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর বলেন, জেলার তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ভালো নেই। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই দলের দুস্থ ও গরিব নেতাকর্মীদের খোঁজখবর রাখেন না। জেলার সব উপজেলায় সাংগঠনিক অবস্থা ভালো আছে। কিন্তু বাউফল উপজেলায় অনেক দিন যাবৎ বিরোধ চলছে। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপিংয়ের কারণে প্রায়ই সেখানে মারামারির মতো ঘটনা ঘটছে। নির্বাচনের আগেই এই সমস্যা সমাধানে দলের সাধারণ সম্পাদকের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
শেখ হাসিনার উদ্দেশে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদ তালুকদার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা আজকে আপনার সামনে কমিটমেন্ট করে যাব যে আমরা দলের ভেতরে কোনো বিভাজন করব না। নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াব। মানুষের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক বাড়াব। এখান থেকে বের হয়ে দলবল নিয়ে গিয়ে এলাকায় গ্রুপিং করব, এটা যেন না হয়। যাকেই মনোনয়ন দেবেন আমরা তার পক্ষেই কাজ করব। উপজেলাগুলোতে কমিটি করে আমরা কাজ করছি। কিন্তু সমন্বয়ের অভাবে আমরা কাজগুলো স্থায়ী রাখতে পারছি না।’
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘অনেকেরই এমপি হওয়ার স্বপ্ন থাকতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা অভিযোগ করেন, দিনাজপুরের একজন সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আসছেন। ওই সংসদ সদস্য দলীয় শৃঙ্খলা মানেন না। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন অভিযোগ তোলেন, এমপিরা নেতাকর্মীদের কোনো খোঁজখবর রাখেন না।
আরো যা বললেন তৃণমূলের নেতারা
লালমনিরহাট জেলার সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান লালমনিরহাটে আগামী দিনে লাঙলের পরিবর্তে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান। এ সময় লালমনিরহাটের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন তিনি। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লালমনিরহাট তো লালে লাল হয়ে গেছে। অনেক কিছু দিয়েছি।
ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য নিজাম হাজারী বলেন, খালেদা জিয়ার জন্মস্থান হওয়ায় ফেনী একসময় বিএনপির ঘাঁটি ছিল। সাড়ে ১৪ বছরে জেলার প্রতিটি এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। ফলে জেলায় ভোটের চিত্রও বদলে গেছে। ফেনী এখন আওয়ামী লীগের ঘাঁটি।