atv sangbad

Blog Post

বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের ঘটনা বের করতে আরও গবেষণা প্রয়োজন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সৈকত মনি, এটিভি সংবাদ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার নেপথ্যের ঘটনাগুলো আরও গবেষণা করে বের করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেছেন, ’বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগে কোন কোন দেশের কূটনীতিকরা ঢাকায় আনাগোনা করেছিলেন এবং পরবর্তীতে কারা, কোন কোন দেশের লোকেরা কী বলেছেন সেগুলোও গবেষণা করে দেখা উচিত।’

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে দেশে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছিল। বাসন্তীর কাহিনী প্রচার করা হয়েছিল। তখন বহু লোক দেশে আনাগোনা শুরু করে এবং একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করে। আজকের বাংলাদেশেও সেরকম একটা অস্থিরতা সৃষ্টির প্রয়াস চলছে। ওই সময়ের সঙ্গে একটা সাদৃশ্য দেখা যাচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অভাবনীয় অগ্রগতির পরও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগে আমরা যে ধরনের অস্থিরতা দেখেছিলাম, মনে হয় এখনও সেই ধরনের অবস্থা সৃষ্টি করার জন্য কেউ কেউ উঠেপড়ে লেগেছে। সুতরাং আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের যে অপপ্রচার শুরু হয়েছে তা প্রতিহত করতে আমাদের আরও সক্রিয় হতে হবে।’ পঁচাত্তরের পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
 
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 
বঙ্গবন্ধু একটি আদর্শ, একটি চেতনা, একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি আমাদের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র দিয়ে গেছেন, একটি জাতিসত্তা সৃষ্টি করে গেছেন। শুধু একটা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র তৈরি করেই তিনি ক্ষান্ত হননি, মাত্র সাড়ে তিন বছরে একটা সদ্য স্বাধীন দেশকে শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যা যা প্রয়োজন জাতির পিতা হিসেবে তিনি সেই সব কাজ করে গেছেন।
ড. মোমেন বলেন, ‘যতগুলো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ছিল, এই অল্প দিনে সবগুলোর সদস্যপদ বাংলাদেশ অর্জন করেছিল। এমনকি জাতিসংঘের সদস্যপদও বাংলাদেশ অর্জন করতে সক্ষম হয়।’
ড. মোমেন আরও বলেন, 
পৃথিবীর খুব কম দেশই আছে যারা এতো অল্প সময়ের মধ্যে এতোগুলো রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং তার ব্যক্তিত্বের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছিল। শুধু স্বীকৃতি অর্জন নয়, মাত্র দু’

 

মাসের মাথায় বন্ধুপ্রতিম ভারতের সৈন্যদের ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন। খুব কম দেশেই এ ধরনের নিদর্শন আছে। এই জাতিকে একটি শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু মাত্র ৯ মাসের মধ্যে একটি সুন্দর, শক্তিশালী সংবিধান দিয়ে গেছেন। পৃথিবীর খুব কম দেশেই এতো অল্প সময়ের মধ্যে সংবিধান প্রণয়নের নজির আছে। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে- শিক্ষা ক্ষেত্রে, শিল্প ক্ষেত্রে, কৃষি ক্ষেত্রে, সর্বক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু যে পরিকল্পনা তৈরি করে গেছেন আজ শেখ হাসিনা সেই পথ ধরেই কাজ করে যাচ্ছেন; ফলে দেশের উন্নয়ন এতো ত্বরান্বিত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু একটি স্বাধীন দেশ দিয়ে যান নাই, তিনি আমাদের হৃদয়ে একটি স্বপ্ন দিয়ে গেছেন, আর সেই স্বপ্ন হলো সোনার বাংলার স্বপ্ন। একটি উন্নত, সমৃদ্ধশালী অর্থনীতি, যেখানে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা সবার জন্য নিশ্চিত হবে। তার সেই স্বপ্ন অর্জনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
 
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে সারা বিশ্বকে জানাতে আমাদের সবগুলো মিশনে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করেছি। যেখান থেকে ওই  দেশে যারা বাঙালি আছেন তাদের নিয়ে, সেই দেশের থিংকট্যাংক প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে বিভিন্ন ধরনের সভা, সেমিনারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে সবাইকে জানাতে হবে।’
 
ড. মোমেন বলেন, 

বিশ্ববাসীকে জানাতে হবে- বঙ্গবন্ধু মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকারের জন্য জীবনের ১৪টি বছর কারাবরণ করেছেন। বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে অনন্য দেশ যেখানে গণতন্ত্রের জন্য, ন্যায়বিচারের জন্য, মানবাধিকারের জন্য ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে।

 

এছাড়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে যে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে সেটাও বিশ্ববাসীকে জানানো দরকার বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
 
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আমীর হোসেন আমু বলেন,  

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর অনেকেই মনে করেছিলেন, এই হত্যাকাণ্ড পরিবারকেন্দ্রিক। তবে পরে ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়, এটা পরিবারকেন্দ্রিক নয়। এটা ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। আমরা কোনোভাবেই মাঠের আন্দোলনকে ভয় পাই না। তবে বিএনপি মাঠের আন্দোলনে পরাজিত বলেই আজ বিদেশি শক্তির ওপর ভর করছে। বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে।

 

আমু বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন এগিয়ে চলেছে। বিশ্বে আমাদের আগে সম্মান কী ছিল, আর এখন কী হয়েছে, সেটা সবাই জানেন। এই সম্মান হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই। আমাদের দেশ ছোট হলেও শেখ হাসিনা অনেক বড় নেতা।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন।
 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ব্রেকিং নিউজ :