নিউজ ডেস্ক, এটিভি সংবাদ :
ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীমকে আনার হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার ঘটনায় ভারতে গ্রেফতার জিহাদ হাওলাদারের বাড়ি খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর গ্রামে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমপি আনার হত্যায় জিহাদের নৃশংসতার বর্ণনা শুনে বিস্মিত সেই গ্রামের মানুষসহ তার পরিবার। জিহাদের স্ত্রীসহ পরিবারের দাবি, গত দেড় বছর ধরে সে কোথায় আছে, তা তারা জানতেন না।
দিঘলিয়ার বারাকপুর বাজারের পাশে একটি টিনশেড বাড়িতে থাকতেন জিহাদ। তিনি ও তার বাবা জয়নাল হাওলাদার পেশায় রং মিস্ত্রির কাজ করতেন। শুক্রবার (২৪ মে) দুপুরে ওই বাড়িতে গনমাধ্যমের লোকজন যায়,সেখানে কৌতূহলী লোকজন ভিড় করেছেন। তারা জিহাদের স্ত্রী ও বাবার সঙ্গে কথা বলছেন।
জিহাদের স্ত্রী মুন্নি বেগম বলেন, ‘চার বছর তাদের বিয়ে হয়েছে। আড়াই বছরের একটি সন্তান আছে তাদের। প্রায় দেড় বছর আগে ঢাকা ও যশোরে দুটি মামলায় জড়িয়ে পড়ায় জিহাদ গা ঢাকা দেন। তখন যশোর থেকে একবার ডিবি পুলিশ বাড়িতে এসেছিল। জিহাদ বাড়ি ছাড়ার পর থেকে কোথায় আছে তা আমরা জানি না। সবশেষ ৯ মাস আগে ফোন করে এক-দেড় মিনিট কথা বলে আড়াই বছরের ছেলে ও বাবা-মার খবর নিয়েছিল। কিন্তু কোথায় আছে তা বলেনি। এমপি আনার হত্যার মিশনে নেতৃত্ব দেওয়া শীর্ষ চরমপন্থি নেতা শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল কিনা তাও আমার জানা নেই।’
এলাকায় আধিপত্য নিয়ে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। তার কারণেই ছোট বেলা থেকেই উগ্র জিহাদ। ছেলের এই পরিণতির জন্য দুষলেন স্থানীয় রাজনীতিকে।
বারাকপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, জিহাদ কিছুটা উশৃঙ্খল ছিল। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পর আর লেখাপড়া করেনি। মাঝেমধ্যে এলাকায় মারামারিতে জড়াত। দুই দফায় দফায় প্রায় আট মাস জেলও খেটেছে। কিন্তু এমন নৃশংস কাজ যে করবে তা ধারণা করিনি। টিভিতে তার ছবি ও খবর দেখে গ্রামের সবাই হতবাক। জিহাদের ভাই জায়েদ বারাকপুর এলাকায় এক আনসার সদস্য হত্যা মামলার আসামি। খুনের সঙ্গে জড়িত থাকলে জিহাদের শাস্তির দাবি জানান তারা।
খুলনা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, তারা ধারণা করছেন জিহাদ দেশে থাকাকালেই তার সঙ্গে চরমপন্থি নেতা শিমুলের পরিচয় হয়। অথবা জিহাদ পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দিয়েছিল। হয়তো শিমুল তাকে এই হত্যা মিশনে সম্পৃক্ত করেছে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত নয়, তারা খোঁজখবর নিচ্ছেন।
ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বরাতে দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে, পাসপোর্ট ছাড়াই ভারতে গিয়েছিল জিহাদ। তিনি মুম্বাইয়ে কসাইয়ের কাজ করতেন। এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামান শাহীন কলকাতায় যাওয়ার দুই মাস আগেই জিহাদকে তিনি ওই শহরে ডেকে নেন। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ স্বীকার করেছে, আখতারুজ্জামানের নির্দেশে তিনিসহ ৪ জন এমপি আনারকে ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গুম করেন।
Copyright © 2023 Atv Sangbad (A Concern of Aparadh Anusondhan Ltd) All rights reserved