রংপুর প্রতিবেদক, এটিভি সংবাদ

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি কত মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। এরা মানুষের জাত না। ক্ষমতায় থাকলে লুট করে তারা। না থাকলেও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। তারা শুধু জ্বালাও-পোড়াও আর ধ্বংসই করতে পারে। খালেদা জিয়া ও তার কুপুত্র তারেক জিয়া লুটপাট করতে জানে। তারা ধ্বংস করে আর আমরা সৃষ্টি করি। নৌকা ক্ষমতায় এলে কাজ হয় আর অন্য কেউ এলে কোনো কাজ হয় না।

বুধবার (২ আগস্ট) বিকেলে রংপুর জেলা স্কুল মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে, অনেক আন্দোলন করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছি। মানুষ এখন শান্তিতে ভোট দিতে পারে। ভোট দেওয়ার জন্য ভোটার তালিকাও করেছি। প্রতিটি এলাকায় উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি। নারীদের জন্য কাজের সুবিধা করে দিয়েছি।

• আরও পড়ুন : সরকারি কর্মচারীরা গাড়ি কিনতে পারবেন দেড় কোটি টাকা মূল্যের!

তিনি আরও বলেন, আমাদের কাজের লক্ষ্য দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করা। দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নতি করা। এ অঞ্চলে জীবনেও দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে না, মঙ্গা দেখা দেবে না। বাংলাদেশে কোনো ভূমিহীন মানুষ থাকবে না। তিস্তা মহা-পরিকল্পনা বাস্তবায়নও করবো। আমরা সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। কয়লার দাম ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ নিয়ে কয়েকদিন কষ্ট হয়েছে। এখন ঠিক হয়ে গেছে। বিদ্যুতের আর কোনো সমস্যা থাকবে না। আমি খালি হাতে আসিনি। আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। কতগুলো প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। যাতে প্রত্যেকটা উন্নয়ন তরান্বিত হয় তার ব্যবস্থা করেছি।

জাতির পিতাকে হত্যার পর মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছিল। সে সময় প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের হাহাকার দেখিছে। আমাদের প্রতিজ্ঞা ছিল যখন সরকার গঠন করতে পারবো তখন মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবো। আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেসব স্বপ্ন দেখে গেছেন তা পূরণ করছি। দেশের দারিদ্র্যের হার কামাতে পেরেছি। খুদামুক্ত দেশ করতে পেরেছি।

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় রংপুর কোনোদিন মঙ্গা হয় নাই। আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এবং নৌকায় ভোট দিলে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয় আমরা তা প্রমাণ করেছি। খালেদা জিয়া মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর এসবের পরিবর্তন হয়েছে। সাড়ে ১৪ বছর যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান করেছি। রংপুরকে বিভাগ হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগ কৃষকের বন্ধু। কৃষকদের জন্য কুড়িগ্রামে ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সারের দাম কমিয়ে দিয়েছি। অথচ খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে কৃষক সার চাইলে গুলি করে হত্যা করেছেন।

• আরও পড়ুন : দুর্ঘটনার কবলে প্রটোকলের গাড়ি, আহত ৩ পুলিশ সদস্য 

এর আগে দুপুর ২টায় তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রংপুর সেনানিবাস হেলিপ্যাডে পৌঁছায়। সড়কপথে সার্কিট হাউজে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী সেখানে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় শেষে সভায় অংশ নেন। এর আগে দুপুর সোয়া ১২টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে জনসভার কার্যক্রম। রংপুরের ঐতিহাসিক জিলা স্কুল মাঠ নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় ভরে যায়।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

জনসভা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন- সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, নৌ পরিবহন মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান, সাবেক সাংস্কৃতিক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।