খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
খাগড়াছড়ি জেলা সদরের ভাইবোনছড়া নিভৃত গ্রাম পাকোজ্জ্যাছড়ির বাসিন্দা পারুল চাকমা। বৃহস্পতিবার জেলা সদরে সাপ্তাহিক হাটের দিন নিজের সন্তান রামকৃষ্ণ চাকমাকে বিক্রির জন্য বাজারে তুলেন। মাত্র ১২ হাজার টাকায় সন্তান বিক্রি করতে চান তিনি।
বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে এলে জেলা সদরে ২ নং কলমছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুনীল চাকমার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপে বাড়ি ফিরেন মা ও সন্তান।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন।
শুক্রবার ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুজন চাকমা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘১২ হাজার টাকায় সন্তান বিক্রি’ ছড়িয়ে পড়া খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, খবরটি শোনার পর আমি খুব ভোরে পারুল চাকমার বাড়িতে যাই। পারুল চাকমার পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। কয়েক বছর আগে স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ হয় তার। এরপর থেকে বাবার বাড়িতে বসবাস করেন। কোনোরকমে মাথা গোঁজার মতো একটা ঠাঁই আছে। সে মানসিকভাবেও কিছুটা অসুস্থ, মৃগী রোগেও আক্রান্ত। দারিদ্র্যতার কারণে তাদের ঠিকমতো খাবার জুটে না। একরকম বাধ্য হয়েই সন্তানকে বাজারে বিক্রি করতে যান। বিষয়টি খুব দুঃখজনক। আমি তাদের নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী দিয়েছি।
বাজারে সন্তান বিক্রি করতে যাওয়া পারুল চাকমা বলেন, নিজেই ঠিকমতো খেতে পারি না, বাচ্চাকে কী খাওয়াব? এলাকার সব মানুষই কমবেশি দরিদ্র। তাই সন্তানকে একটি ভালো পরিবারে দিতে বাজারে নিয়েছিলাম। যদি কিছু টাকা পাই, সন্তানও ভালো থাকবে।
শুক্রবার সকালে ভাইরাল হওয়া পারুল চাকমাকে দেখতে ভাইবোনছড়ায় যান পার্বত্য সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখার পর বিষয়টি জানতে পারি। অভাবের কারণে সন্তান বিক্রি করতে চাওয়া খুবই দুঃখজনক।
এ সময় তিনি পরিবারটিকে ৬ মাসের খাবার সামগ্রী, নগদ অর্থ সহায়তা দেন। একই সঙ্গে তাদের একটি সরকারি ঘর দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান।
উল্লেখিত বিষয়টি নজরে আনেন স্থানীয় সাংসদ বাসন্তী চাকমা। স্থানীয় সাংসদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সমাধান হবে বলে মন্তব্য করেন, এটিভি সংবাদের সম্পাদক এস এম জামান।