atv sangbad

Blog Post

বিজয় না আসা পর্যন্ত গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলন চলবে : কারামুক্তির পর ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস কারাবন্দির পর মুক্তি পেয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে উপস্থিত হলে নেতাকর্মীরা মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে স্বাগত জানালে তাদের অভিবাদনের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আন্দোলনের কোনো ক্ষতি হয়নি। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রথমে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল এবং ৪ মিনিট পরে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বের হন।

এসময় নেতাকর্মীরা নেতাদের ফুলের পাঁপড়ি ছিটিয়ে ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভাইয়ের ভয় নাই, আমরা আছি তোমার সাথে’, ‘আমীর খসরু ভাই এগিয়ে চলো আমরা আছি তোমার সাথে’, মহাসচিবের মুক্তি আন্দোলনের শক্তি, খসরু ভাইয়ের মুক্তি আন্দোলনের শক্তি’, ‘জিয়া, খালেদা, তারেক জিন্দাবাদ জিন্দবাদ’ ইত্যাদি শ্লোগান দিতে থাকেন।

নেতাকর্মীদের হাত তুলে অভিবাদন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ সব সময় গণতন্ত্রের জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য, ভাতের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে। ইনশাল্লাহ এই সংগ্রামে তারা জয়ী হবে।’

গণতন্ত্র ফেরানো চলমান আন্দোলন বিজয় না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকার কথাও দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন বিএনপি মহাসচিব।

পরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ওরা রাষ্ট্র শক্তিকে কবজা করে ক্ষমতা দখল করেছে, বাংলাদেশের মানুষ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা নির্বাচনে নৈতিকভাবে জনগণের কাছে পরাজিত হয়েছে। আমরা বলতে চাই, গণতন্ত্রের আন্দোলন অটুট থাকবে। যদি দেশে গণতন্ত্র ফেরত না আসবে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার না আসবে ততদিন এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে তাইফুল ইসলাম টিপু, শামীমুর রহমান শামীম, নিপুণ রায় চৌধুরী, ফরহাদ হোসেন আজাদ, সাবেক সাংসদ আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম, শায়রুল কবির খানসহ অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

পরে মহাসচিবের গাড়ি ছাত্রদলের নেতাকর্মী মোটরবাইকে কর্ডন করে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হয়। কারাগারে মুক্তির সময়ে বিএনপি মহাসচিবকে আনতে তার সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগম, বিএনপি মহাসচিবের একান্ত সহকারী ইউনুস আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, গত ২৯ অক্টোবর গোয়েন্দা পুলিশ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এবং ২ নভেম্বর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গুলশানের তাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং পরে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের দিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় গ্রেফতার দেখায়।

ওই সংঘর্ষের ঘটনায় ফখরুলের বিরুদ্ধে ১১টি এবং খসরুর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা হয়। এরমধ্যে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনাটি ছাড়া সব মামলায় তারা বিভিন্ন সময়ে জামিন পান। বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদের প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনার মামলায় বিএনপি এই দুই শীর্ষ নেতার জামিন মঞ্জুর করেন। বৃহস্পতিবার সকালে দুই নেতার আইনজীবীরা বিভিন্ন মামলার জামিন আদেশ, প্রোডাকশন ওয়ারেন্টসমূহ প্রত্যাহারের আদেশসমূহ সব ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়ার পর বিকেলে মুক্তি পেলেন বিএনপির দুই শীর্ষ নেতা।

জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘সরকার পতনের’ এক দফা দাবিতে ২৮ অক্টোবর সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। সেদিন দুপুরের আগে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরুর পর কাকরাইল মোড়ে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে শান্তিনগর, নয়াপল্টন, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, আরামবাগ এবং দৈনিক বাংলা মোড় এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। সংঘর্ষে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেওয়া হয়, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয় আরও ডজনখানেক যানবাহন। হামলা করা হয় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে।

দৈনিক বাংলা মোড়ে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘাতে প্রাণ যায় যুবদলের মুগদা থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা শামীম মোল্লার।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ব্রেকিং নিউজ :