সৈকত মনি, এটিভি সংবাদ 

গণআন্দোলনে সরকারের পতনের পর ঢেলে সাজানো হচ্ছে প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় পুলিশে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ডিএমপি কমিশনার ও র‌্যাবের মহাপরিচালকসহ কয়েকটি শীর্ষ পদেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আর তাতেই আতঙ্ক বাড়ছে পুলিশে। বিশেষ করে যারা বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক পরিচয়ে বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে সহায়তা করেছেন তাদের মধ্যে আতঙ্কটা বেশি। এসব কর্মকর্তাদের অনেকে এখন গা ঢাকা দিয়েছেন। বাকি যারা আছেন তারাও বেশ ভয়ে আছেন। কখন কাকে ওএসডি ও বদলি করা হয় সেই আতঙ্কে আছেন তারা।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরুতে শান্তিপূর্ণ থাকলেও একপর্যায়ে তা সহিংতায় রূপ নেয়। কয়েকদিন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষে চার শতাধিক মানুষ নিহত হন। তীব্র আন্দোলনের মুখে গত সোমবার দুপুরে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। সরকারপ্রধানের দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় অনেক থানা। পুলিশের গুলিতে মারা যান অনেকে।

এমন সহিংসতার পর অনেক পুলিশ কর্মকর্তা আত্মগোপনে চলে যান। ভেঙে পড়ে পুলিশের চেইন অব কমান্ড। এরপর আইজিপিসহ বাহিনীটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের একের পর এক বদলি করা হয়। আর তাতে আতঙ্ক বাড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটির মধ্যে।

জানা যায়, বিগত সময়ে যারা সরকারের আস্থাভাজন হিসেবে কাজ করে পদ বাগিয়ে নিয়েছেন তারা এখন হয় ওএসডি অথবা অন্যত্র বদলি হবেন। তবে কাউকে আপাতত চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে না।

ঢাকা মহানগরীর একজন সহকারী উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, রদবদল শুরুর পর ডিএমপির ঊর্ধ্বতনের দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত সোমবার থেকে ডিএমপির প্রায় দেড় শতাধিক কর্মকর্তা গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আলোচনায় থাকা কর্মকর্তারা এখন সেনাবাহিনীর হেফাজতে আছেন বলেও জানান তিনি।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, সবেমাত্র রদবদল শুরু হলো এবং আরও হবে। পর্যায়ক্রমে পুলিশকে ঢেলে সাজানো হবে। কারণ পুরাতনরা যেভাবে চালিয়েছে তার জন্য আজকে পুলিশের এত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঢাকা থেকে শুরু হলো, এখন জেলা ও বিভাগীয় শহরগুলোতেও ঊর্ধ্বতনদের বদলি করা হবে। পরে সেসব জায়গায় যোগ্য ও সৎ অফিসারদের বসিয়ে দেওয়া হবে।