ভোলা প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
ভোলার মনপুরা এবং সদরের মেঘনা নদীতে তীব্র ঝড়ের কবলে পড়ে মাছ ধরার ১০টি জেলে ট্রলার ডুবে গেছে। এ ঘটনায় এক জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। ১০টি ট্রলারের মধ্যে ৮টি ট্রলার ডুবছে মনপুরায় অন্য ২টি ডুবছে সদরের বঙ্গের চর ও ভোলার চর এলাকায়।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে এবং শনিবার ভোরে জেলার মনপুরা এবং সদর উপজেলার মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেইলকে ৫টি ট্রলারডুবির ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শুক্রবার দিনগত রাতে এবং শনিবার ভোররাতে জেলায় হঠাৎ করে তীব্র ঝড়-তুফান শুরু হয়। এই ঝড়ের কবলে পড়ে শুক্রবার দিনগত রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মনপুরা মেঘনা নদীর চর কলাতলি, মনির বাজার, রামনেওয়াজ মাছঘাট, দক্ষিণ সাকুচিয়া, পুরাতন লঞ্চঘাট এবং কুঠারি চর এলাকাসহ আরো বেশ কয়েকটি জায়গায় মাছ ধরার ৮টি ট্রলার ডুবে গেছে।
ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলোর মালিকরা হলেন, মনপুরা ইউনিয়নের মো. আলাউদ্দিন মাঝি, মো.বশার মাঝি, মাইনুদ্দিন মাঝি, মহিউদ্দিন মাঝি, হাজির হাট ইউনিয়নের মো. ইউনুস মাঝি, মনির মাঝি, রফিক মাঝি ও সাকুচিয়া ইউনিয়নের মো. সুজন মাঝি।
তবে মনপুরায় ডুবে যাওয়া ৮টি ট্রলারের সকল মাঝিমাল্লা ঝড়ের কবল থেকে উদ্ধার হলেও বশার মাঝির ট্রলারে থাকা মো. আলাউদ্দিন নিখোঁজ রয়েছেন।
নিখোঁজ আলাউদ্দিনের বাড়ি মনপুরার হাজির হাট ইউনিয়নের সোনার চর এলাকায়। তার বাবার নাম মো. আবু তাহের।
বশার মাঝি জানান, শুক্রবার বিকেলের দিকে তিনিসহ ৬ জন মাঝিমাল্লা মেঘনায় মাছ ধরতে যান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ করে তীব্র ঝড় তুফান শুরু হলে পুরাতন লঞ্চঘাট এলাকায় তার ট্রলারটি ডুবে যায়। এসময় তিনিসহ অন্য ৫ জেলে উদ্ধার হলেও আলাউদ্দিন নিখোঁজ হয়ে যায়। শনিবার সকাল থেকে তাকে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে খোঁজছেন। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত কোষ্টগার্ড, নৌ-পুলিশ কিংবা ফায়ারসার্ভিসের কেউই ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযানে যাননি।
মাইনুদ্দিন, মনির এবং রফিক মাঝি জানান, ৮টি ট্রলারের মধ্যে বেশিরভাগ ট্রলার আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে।
এদিকে শনিবার ভোররাতে ভোলা সদর উপজেলার বঙ্গের চর এবং ভোলার চর এলাকায় আরো ২টি জেলে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। ওই ট্রলার দুটির মালিক হলেন, রাজাপুর ইউনিয়নের বরকত মাঝি এবং পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের সোনাডগী গ্রামের আলী আজগর। ট্রলার দুটি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে দুইটি ট্রলারের জাল নদীতে ভেসে গেছে।
ট্রলারডুবির ঘটনা ছাড়াও শুক্রবার দিনগত রাত এবং শনিবার ভোররাতের ঘটনায় জেলার মনপুরা এবং ঢালচর এলাকায় বেশ কয়েকটি বসতঘর আংশিক বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
জেলার মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ঝড়ের কবলে পড়ে বেশ কয়েকটি ট্রলার ডুবছে মর্মে খবর পেয়েছি। তবে সঠিক সংখ্যা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারিনি। মনপুরায় ৫টি ট্রলার ডুবছে এবং একজন নিখোঁজ আছেন এমন খবর শুনেছি।
তিনি আরো বলেন, সদর উপজেলায় দুটি ট্রলারডুবির ঘটনা শুনেছি। তবে দুপুর পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারিনি। নদীর মাঝে ট্রলার ডুবলে, সে খবর আমাদের কাছে এসে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে।
নিখোঁজ জেলেকে উদ্ধারের বিষয়ে জানতে, কোষ্টগার্ড দক্ষিণ জোন এবং নৌ-পুলিশকে ফোন করা হলেও তা রিসিভ হয়নি।
Copyright © 2023 Atv Sangbad (A Concern of Aparadh Anusondhan Ltd) All rights reserved