মাগুরা প্রতিনিধি, এটিভি সংবাদ
মাগুরায় টানা তিন দিনের ভয়াবহ বৃষ্টিতে শহরের অধিকাংশ এলাকায় হাঁটুসমান পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। পানি নিষ্কাশনের অব্যবস্থাপনার কারণে একটু বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যাচ্ছে নগরের নিম্নাঞ্চল। শীতকালীন সবজি, আমন ধান ও মাছের ঘের-পুকুর ভেসে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত শহরের ডিসি অফিস, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, সরকারি কলেজ, উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, আদর্শ ডিগ্রি কলেজসহ শহরের অধিকাংশ সড়কে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।
টানা বৃষ্টির জন্য জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন কম বের হয়েছেন। তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে এলাকাজুড়ে স্থবিরতা নেমে আসে। কাজে যেতে না পেরে নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ বিপাকে পড়েন। বিদ্যুৎ বিপর্যয় চলছে। গ্রামের অনেক জায়গায় ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিঘ্নিত হচ্ছে ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক।
সড়কের পাশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এখনও একটু বেশি বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যাচ্ছে নগরের নিম্নাঞ্চল। প্রধান সড়কে জলজট তৈরি হচ্ছে। শীতকালীন সবজি, আমন ধান ও মাছের ঘের-পুকুর ভেসে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। মাগুরা সদর, শ্রীপুর, শালিখা ও মহম্মদপুর উপজেলার সর্বত্র একই চিত্র বলে জানা গেছে।
পৌর এলাকার রিকশাচালক জামাল বলেন, তিন দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিতে খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। সকাল থেকে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার পরেও বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে বেরিয়েছি। রাস্তায় গর্ত হয়ে গেছে ,পানিতে পাকা সড়কে গর্ত দেখা যায় না। তারপরও পেটের তাগিদে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি।
শহরের দোয়ারপারার বাসিন্দা সঞ্জিবন বলেন, পানি নিষ্কাশনের অব্যবস্থাপনার কারণে মাগুরা শহরে অনেক এলাকায় বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
এ ছাড়াও বৃষ্টির পানির সঙ্গে বন্ধ থাকা ড্রেনের ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি একাকার হয়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় গোটা এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।
সাহাপাড়ার বাসিন্দা উত্তরণ মজুমদার বলেন, ৩০ বছর ধরে দেখছি, একটু বৃষ্টি বেশি হলেই এলাকার বাড়িঘর-রাস্তাঘাটে হাঁটুসমান পানি জমে থাকে। পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি দেখা যায় না।
মাগুরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল কাদের জানান, অতিবৃষ্টির কারণে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের চারিদিকে হাঁটুসমান পানি জমে গেছে। গাড়ি নিয়ে অফিসে আসা-যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে সবাইকে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার করা না হলে এ জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না।
মাগুরা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল বারী জানান, পৌরবাসীর জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান করতে ইতোমধ্যে ২০ কিলোমিটার ড্রেনেজ নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রায় ১৫০ কোটি টাকার এ প্রকল্পের ডিপিপি তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। যা একনেক সভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে।
Copyright © 2023 Atv Sangbad (A Concern of Aparadh Anusondhan Ltd) All rights reserved